বাংলায় কোথায় বাঘ আছে? উত্তরে শুধু সুন্দরবন লেখার দিন আপাতত শেষ। কারণ, বাঘ আছে উত্তরেও। মানে উত্তরবঙ্গেও। বড় খবর, বক্সা টাইগার রিজার্ভে বাঘের উপস্থিতি। হাজারো জল্পনার পর সরকারি সিলমোহর দিয়ে দিল কেন্দ্রের রিপোর্ট। রিপোর্টের পাতায় পাতায় দেশের ব্যাঘ্র প্রকল্পেরও জয়জয়কার। আরও একবার বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। বাইশের গোনাগুনতি শেষে সংখ্যাটা এখন ৩,৬৮২।
এ বার চার হাজার পার?
২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস। চার বছর অন্তর এই দিনেই দেশের বাঘ গণনার রিপোর্ট সামনে আনে ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি। ২০১৮ সালের রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন বাঘের সংখ্যা পৌঁছয় তিন হাজারের দুয়ারে। এ বছর এপ্রিলে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট প্রকাশ করে কেন্দ্র জানায়, দেশে অন্ততপক্ষে ৩,১৬৭টি বাঘ আছেই। শনিবার মূল রিপোর্ট বেরোতে দেখা গেল, সংখ্যা হয়েছে ৩,৬৮২। অর্থাত্, চার বছরে বাঘ বেড়েছে ৭১৫টি।
তবে এটা গড় হিসেব। সর্বনিম্ন সংখ্যা আগেই প্রকাশিত। স্টেটাস অফ টাইগারস রিপোর্ট বলছে, সর্বোচ্চ ৩,৯২৫টি বাঘ থাকতে পারে দেশে। অর্থাত্, চার হাজার ছোঁয়ার মুখে দাঁড়িয়ে দেশের ডোরাকাটা সদস্যরা। ২০০৬ সালে দেশে বাঘের সংখ্যা কমে হয়েছিল ১,৪১১। সেই তলানি থেকে উত্তরণ, নিঃসন্দেহে বাঘ সংরক্ষণে বড় সাফল্য।
সাফল্য বাংলারও। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়ে ১০১-এ দাঁড়িয়েছে। তবে এ বারের রিপোর্টে সুন্দরবন নয়, নজর কেড়েছে উত্তরবঙ্গ। ২০০৬ সালের রিপোর্টে উত্তরবঙ্গে ১০টি বাঘের উপস্থিতি ছিল। ২০১৮ সালে তা শূন্যে নেমে আসে। এ বার সংখ্যাটা দুই। তার মধ্যে একটি বক্সার জঙ্গলে।
বক্সায় বাঘ আছে না নেই, এই নিয়ে বিস্তর জল্পনা। সরিস্কার মতো বক্সায় নতুন করে বাঘ ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। সে সময় যাতে শিকারের অভাব না হয়, তার জন্য হরিণ ছাড়া হয় মাঝেমধ্যেই। রয়েছে বনবস্তি সরানোর পরিকল্পনাও। কিন্তু প্রকল্পের বাস্তবায়ন এখনও হয়নি। এরই মধ্যে একুশের শেষাশেষি বক্সার ক্যামেরা ট্র্যাপের বাঘের ছবি ওঠে। হইচই পড়ে যায় রাজ্যে। তার পরই কেন্দ্রের রিপোর্টে ‘লিখিত’ সিলমোহর।
উত্তরবঙ্গের অন্য বাঘটি কি তবে নেওড়া ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে? শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ, বক্সা বাদে নেওড়াতেই ক্যামেরা ট্র্যাপে ধরা দিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল। এখন চার বছরের অপেক্ষা।