নয়া দিল্লি: করোনাকালেই দেশের অর্থনীতিতে পড়েছিল ব্যাপক প্রভাব। তারপর থেকে মূল্যবৃদ্ধি (Inflation) হয়েই চলেছে। দেশে দেখা দিতে পারে খাদ্য সঙ্কট, এই আশঙ্কাতে চাল-ডালের রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবার চিনির (Sugar) উপরেও বসতে চলেছে নিষেধাজ্ঞা। সরকারি সূত্রে খবর, আগামী মরশুমে ভারত চিনির রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা (Export Ban) জারি করা হতে পারে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ার কারণে চিনির উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে, তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সরকারি সূত্রে খবর, আগামী অক্টোবর মাস থেকেই চিনির রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। বিগত সাত বছরে কখনও চিনির রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি ভারত। যদি চিনির উপরে এবার ভারত নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তবে বিশ্ব বাজারেও চিনি ও শর্করা জাতীয় অন্যান্য পণ্যের দাম একধাক্কায় অনেকটা বাড়তে পারে।
চিনির রফতানিতে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসাবে জানানো হয়েছে, এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে আখের উৎপাদন কম হয়েছে। মূলত মহারাষ্ট্র ও কর্নাটক, যেখানে সর্বাধিক আখের চাষ হয়, সেখানে চলতি বছরে গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ৫০ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিগত এক বছর ধরেই দেশে খাদ্যসঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি গত জুলাই মাসেই রেকর্ড ভেঙে ৭.৪ শতাংশে পৌঁছয়। খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিও বেড়ে ১১.৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা বিগত তিন বছরে সর্বোচ্চ।
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশে চিনির উৎপাদন ৩.৩ শতাংশ কমতে পারে। এবারে ৩.১৭ কোটি টন চিনি উৎপাদন হওয়ার কথা। এদিকে চলতি বছরই কেন্দ্রের তরফে মিলগুলিকে ৬.১ কোটি টন চিনি রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়। গত মরশুমে রফতানির পরিমাণ ছিল ১.১ কোটি টন।
চিনির উৎপাদনে ঘাটতির সম্ভাবনা দেখা দিতেই কেন্দ্রীয় সরকার দেশের অন্দরে চিনির চাহিদা ও ইথানল উৎপাদনকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, দেশের চিনির চাহিদা পূরণ ও ইথানল উৎপাদনকেই আপাতত প্রাধান্য় দেওয়া হবে। দেশে যাতে চিনির দাম যাতে না বাড়ে, তাই-ই প্রধান লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, এর আগে বাসমতী ছাড়া অন্য সমস্ত চালের রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপরে পেঁয়াজ রফতানির উপরেও ৪০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসানো হয়।