বেঙ্গালুরু: কর্নাটকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে কংগ্রেস। তবে জয় পেয়েও স্বস্তি নেই কংগ্রেসের। দলের সামনে নয়া চ্যালেঞ্জ কর্নাটকের আগামী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া। শিবকুমার নাকি সিদ্দারামাইয়া, এই নিয়েই চলছে জলঘোলা। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ঘোষণা ইতিমধ্য়েই করে দিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে এখনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেই কাউকে বেছে নেওয়া হয়নি। এই নিয়ে গতকালের পর আজও দিল্লিতে বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। গতকাল এই বৈঠকে গরহাজির থাকলেও আজ এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন ডিকে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, আজকের মধ্যেই কর্নাটক মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে। এখন কর্নাটকের রাজনীতি নিয়ে ছড়িয়েছে টান টান উত্তেজনা। যার আঁচ পৌঁছে গিয়েছে রাজধানী পর্যন্ত।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদের দৌড়ে দুই প্রার্থী হলেন সিদ্দারামাইয়া ও ডিকে শিবকুমার। এই দুই নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে কর্নাটক কংগ্রেস। একদল জানিয়ে দিয়েছে তাঁরা শিবকুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। আর অন্যদল সিদ্দারামাইয়ার পক্ষেই রায় দিয়েছেন। এই নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। ডিকে শিবকুমারের ভাইও গতকাল দিল্লিতে কংগ্রেসের বৈঠকে যোগ দেওয়ার পর দাবি করেছেন, তাঁর দাদারই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত। অন্যদিকে, শিবকুমার মুখে কিছু না বললেও আকার ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি দলের জন্য কী করেছেন। গতকালই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দাবি করেন, তাঁর হাত ধরেই কংগ্রেস কর্নাটকে ১৩৫ টি আসন পেয়েছে।
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া টুডে কে দেওয়া একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শিবকুমার বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পদ পৈত্রিক সম্পত্তি নয় যে ভাগ করে নেওয়া যায়। মনে করা হচ্ছিল, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ২:৩ অনুপাতে এগোতে পারে কংগ্রেস। অর্থাৎ, লোকসভা নির্বাচন অবধি সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্য়মন্ত্রী পদে রাখা। তারপর শিবকুমারকে বাকি মেয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসানো। এখানে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটি সম্ভাবনা চলে আসছে। এই বিষয়ে ডিকে শিবকুমারকে প্রশ্ন করা হয় তিনি সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে নিতে প্রস্তুত কি না। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা সম্পত্তি নয় যে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়। যেরকম পৈত্রিক সম্পত্তি ভাই-বোনেরা ভাগ করে নেয়। তিনি বলেন, “এটা সরকার গঠনের বিষয়। এখানে ভাগাভাগির কোনও প্রশ্ন নেই।” লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সিদ্দারামাইয়ার সমর্থনকারীরা বলছেন তিনি দলকে আরও ভাল নেতৃত্ব দিতে পারবে। সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, “তাঁদের স্বপ্ন দেখতে দিন। লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য়ে বিশেষত গ্রামীণ এলাকায় দলের ভাবমূর্তি গড়ে তোলার স্বপ্ন আমিও দেখি।”
এদিকে আজ দিল্লি পৌঁছেছেন ডিকে। দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে তিনি বলেছেন, দল তাঁর কাছে ঈশ্বর। তিনি বলেন, “ভগবান ও মা জানেন, তাঁর সন্তানদের কী দিতে হয়। আমি মন্দিরে আমার ভগবানের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। আমি একাই যাচ্ছি। আমাকে সাধারণ সম্পাদক একা দেখা করতে বলেছেন।” তিনি আরও বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের ১৩৫ জন বিধায়ক রয়েছে। ওরা আমাকে পছন্দ করুক বা না করুক, আমি সবার সঙ্গে আছি। আমি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। আমি পিঠে ছুরিকাঘাত করব না, আমি ব্ল্যাকমেইল করব না।” এদিকে গতকালই দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছেন আরেক মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী সিদ্দারামাইয়া। আজই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রকাশ্যে আসতে পারে।