আগরতলা: ফল ঘোষণার পরই বিক্ষিপ্ত হিংসার সাক্ষী হল ত্রিপুরা। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘরবাড়ি ভাংচুর, দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, মারধরের ঘটনার কথা রিপোর্ট করা হয়েছে। কোথাও তিপ্রা মোথা বনাম বিজেপি, কোথাও বিজেপি বনাম সিপিআইএম সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। মূলত আদিবাসী এলাকাগুলিতে তিপ্রা মোথার হাতে আক্রান্ত হয়েছে বিজেপি। তাদের অন্তত ২০ জন কর্মী হামলার শিকার বলে অভিযোগ করেছে শাসক দল। আগরতলার জিবি হাসপাতালে আহত কর্মীদের দেখতেও যান মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। অন্যদিকে, বিশালগড়, খয়েরপুর, শান্তির বাজার এলাকায় তাদের দলীয় কার্যালয়ে আক্রমন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিআইএম। এমনকি, হিংসা রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে পুলিশও।
গতকাল রাত থেকেই ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গা থেকে সংঘর্ষের খবর আসতে শুরু করে। শুক্রবারও হিংসার সেই ছবি অব্যাহত রয়েছে। এদিন সকালেই, চাকমাঘাট এলাকায় বিজেপির মণ্ডল কার্যালয় হামলা হয়েছে বলে খবর এসেছিল। সেই খবর পেয়ে পরিস্থতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তেলিয়ামুড়া মহকুমা পুলিশ অফিসার প্রসূন কান্তি ত্রিপুরা। সেখানে তিপ্রা মোথার সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হন তিনি। এমনটাই অভিযোগ পুলিশের। প্রসূন কান্তি ত্রিপুরার মাথা ফেটে গিয়েছে। জখম হয়েছেন তাঁর দেহরক্ষীরাও। প্রসূন কান্তি ত্রিপুরা বলেন, “তিপ্রা মোথার মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তাদের উপর হামলা করেছিল। আমি পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে গেলে তারা আমার উপর এবং আমার দেহরক্ষীদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। আমি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছি। আমার দেহরক্ষীরাও হাতে ও মাথায় আঘাত পেয়েছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, বিজেপি পার্টি অফিসের সামনে রাখা বেশ কয়েকটি গাড়িতেও ভাংচুর চালানো হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন শেষে ফলাফলে সম্পূর্ণ ভাবে গনবর্জিত হয়েও রাজ্যজুড়ে বামপন্থী ও তিপরা মথার হিংসাত্মক কর্মকান্ড বন্ধ নেই।
আজ জিবি ট্রমা সেন্টারে রাজনৈতিক আক্রমনে আক্রান্ত ভারতীয় জনতা পার্টির নির্ভীক কর্মী সমর্থকদের সাথে দেখা করি। pic.twitter.com/AEANJ3EWaB— Prof.(Dr.) Manik Saha (@DrManikSaha2) March 3, 2023
হিংসার খবর এসেছে দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শান্তিরবাজারের কিছু অংশে, খোয়াই জেলার তেলিয়ামুড়া, চাকমাঘাট এবং সেপাহিজলা জেলার বিশালগড় মহকুমা থেকেও। বিশালগড় মহকুমার ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসের সামনেই একটি বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়। বিজেপির জয়ী প্রার্থী সুশান্ত দেব জানিয়েছেন, তিপ্রা মোথা কর্মীরা তাদের মন্ডল অফিসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা হামলা চালায়। তাদের পার্টি অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করে এবং বিনা উস্কানিতে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে প্রায় ১০ জন বিজেপি কর্মী আহত হন।
শান্তিরবাজার মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেট অফিসেও হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে তিপ্রা মোথার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ম্যাজিস্ট্রেট অফিসের বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করেছে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে নিরাপত্তাকর্মীরা। বিজেপির দক্ষিণ জেলা কিষাণ মোর্চার সভাপতির অভিযোগ, শান্তিরবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির উপর একযোগে হামলা চালিয়েছে তিপ্রা মোথা ও সিপিআইএম কর্মীরা। এই ক্ষেত্রে ১৫ জন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের সকলেরই চিকিৎসা চলছে স্থানীয় হাসপাতালে। দুজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের আগরতলার জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।