কলকাতা: স্পর্শ কাতর বুথের তালিকা দেওয়া হয়নি বলে বিএসএফ যে অভিযোগ করছে, তা মিথ্যা, গল্পকাহিনী। মঙ্গলবার (১১ জুলাই), গণনার দিন এমনই দাবি করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের প্রধান রাজীব সিনহা। যদিও তিনি মেনে নিয়েছেন, অধিকাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায়নি। একদিন আগেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা করা হয়েছে বলে, অভিযোগ করেছিলেন বিএসএফ-এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া। রবিবার তিনি বলেন, “সংবেদনশীল বুথগুলির তালিকা আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত নেই। ৫ জুলাই থেকে বার বার ওই তালিকায় চেয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। কমিশনের সঙ্গে যতগুলো বৈঠক হয়েছে, প্রত্যেকটি বৈঠকে আমরা ওই তালিকা চেয়েছি। কিন্তু, সেই তালিকা পাওয়া যায়নি।” এদিন রাজীব সিনহা বলেছেন, “মনে হয় না, ১০ হাজারের বেশি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া গিয়েছিল। স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে বিএসএফ যেটা বলছে, সেটা গল্প ছাড়া কিছু না।”
এদিন, গণনা চলাকালীনও রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতস্তত অশান্তির খবর আসছে। তবে এটা রাজ্যের সার্বিক চিত্র নয় বলে দাবি রাজীব সিনহার। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকটি জেলা থেকে অশান্তির খবর এলেও, কমিশনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণে গণনা মসৃণভাবেই চলছে। গত কয়েকদিনের ভয়ঙ্কর হিংসার পরও, রাজীব সিনহা দাবি করেছেন, শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ ভোট পরিচালনায় কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জানিয়েছেন, হাতে গোনা কয়েকটা জেলা থেকে অভিযোগ এসেছে। কিন্তু, বেশিরভাগ জেলা থেকেই কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে, কোনও জেলা থেকে একটি অভিযোগও এলে, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। রাজীব সিনহা বলেন, “১০০ বা ১০০ বেশি গণনা কেন্দ্রে রাজ্য পুলিশ আছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনীও আছে। কিছু কিছু জায়গায় থেকে গন্ডগোলের খবর এসেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। যাহতীয় সমস্যা মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপ করেছি। গণনা মসৃণভাবে চলছে।”
রবিবারের পর এদিনও তিনি দাবি করেছেন, ভোটের দিন নাকি ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি বলেন, “তবে এখনও পর্যন্ত সবটা যোগ করা হয়নি।” গণনার দিন রাজযের বিভিন্ন জায়গায় রাজ্য পুলিশের ২০ হাজার কর্মী ‘এরিয়া ডমিনেশনে’র কাজ করছে বলে জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজীব সিনহা জানিয়েছেন, প্রতি মুহূর্তে প্রয়োজন অনুসারে নির্দেশ দিচ্ছেন তাঁরা। বাইরের কেউ এলাকায় ঢুকলেই তাঁকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। রাজীব সিনহা বলেন, “যে স্তরের নেতাই হোক, বাইরে থেকে কেউ ঢুকলেই আমরা বের করে দিচ্ছি।” ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকে রাজ্যজুড়ে হিংসার ছবি ধরা পড়েছে। ভোটের আগে মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ভোটের দিন এবং তার পরেও মৃত্যু হয়েছে রাজনৈতিক হিংসায়। ভোটের পরও, এই হিংসা অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন বহু মানুষ। তাদের নিরাপত্তা দিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও ১০ দিন বাংলায় থাকবে বলে জানিয়েছেন রাজীব কুমার। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী আরও ১০দিন রাজ্যে থাকবে।”