কলকাতা: বাংলায় ভোট লুঠের উৎসব দেখেছে গোটা দেশ। তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কিছুটা গণ প্রতিরোধও হয়েছে। মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর আরও দাবি, রাজ্য পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট। গণনার দিনও তারা তৃণমূলের হয়েই কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, “ভোট লুঠের উৎসব আজ গোটা দেশ দেখছে। তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কিছুটা গণ প্রতিরোধ দেখা গিয়েছে। আমাদের সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে আক্রমণ করেছে পুলিশ ও তৃণমূল। তিনি হাসপাতালে ভর্তি। আক্রান্ত চন্দনা বাউড়িও। বহু জাগয়ায় কাউটিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বিজেপি কর্মীরা তাই পথ অবরোধ করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ আমাদের আক্রমণ করেছে। গণনা কেন্দ্র তৃণমূলের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ভোট গণনা চলছে। জেলায় জেলায় তৃণমূলেরই জয়-জয়কার। তবে, যে পরিসংখ্যান দেখা যাচ্ছে , সেটা রাজ্যের প্রকৃত চিত্র নয় বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা। তাঁর মতে, আসলে অধিকাংশ জায়গাতেই ভোট লুঠ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু, যেখানে যেখানে মানুষ নিজের মতামত প্রকাশের সুযোগ পেয়েছেন, সেখানে সেখানে ভোট তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়েছে। অনেক জেলায় আবার দেখা যাচ্ছে, অনেক এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। আর অনেক পিছনে হলেও দ্বিতীয় স্থানের দখল নিয়ে লড়াই চলছে বিজেপি এবং বামেদের মধ্যে। প্রকৃতপক্ষে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হয়েও বহু জেলাতেই জয়ী আসনের সংখ্যায় বামেদের থেকে পিছিয়ে পড়ছে বিজেপি।
তবে, বিজেপি তিন নম্বরে থাকবে না বলেই আত্মবিশ্বাসী শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, “রাজ্যের বিরোধী দল ঠিক জায়গায় থাকবে। অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন।” একই সঙ্গে এই রাজ্যে বিজেপির সংগঠন দুর্বল বলে মানতে নারাজ তিনি। শমীক বলেছেন, “বোমা বাঁধার লোক আমাদের কাছে নেই। তাই আমাদের সংগঠন দুর্বল বলেন অনেকে। তবে, ওই পথে আমরা যাব না।” শমীক ভট্টাচার্যর আরও দাবি, তৃণমূলের লাগাতার সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ সমাজে প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। সন্ত্রাসের মুখে দেওয়াল পিঠ ঠেকে গিয়েছে মানুষের। আর সেই কারণেই জায়গায় জায়গায় প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে সীমাহীন সন্ত্রাসের সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ শিল্পী শুভাপ্রসন্নও।
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা বলেছেন, “সেদিন যাঁরা চুপ করে ছিলেন, আজ তাঁরা বুঝতে পারছেন, যখন আক্রমণ শুরু হয়, তখন শুধু বেছে বেছে বিজেপির উপর আক্রমণ করা হয় না, সাধারণ মানুষকেও তার বলি হতে হয়। সুশীল সমাজের কোনও কোনও প্রতিনিধি হঠাৎ জেগে উঠছেন। কেউ কেউ মুখ খুলছেন। তবে, এই রাজ্যে ভোটের আগে গত ৬ মাসে শিশু-কিশোর-সহ ২৫ জনের প্রাণ গিয়েছে। তার কেউ প্রতিবাদ করেননি। ভোট পরবর্তী হিংসাও চলবে, অনেকে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এই সরকারের কাছ থেকে আমাদের কোনও মানবিক পদক্ষেপের আশা নেই।” এই হিংসাধস্ত ভোটের পরও অবশ্য রাজ্যে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে বিজেপি নয় বলে জানিয়েছেন শমীক। তিনি বলেছেন, “তবে, ৩৫৫ ধারা জারি করা যেতে পারে।” ৩৫৫ ধারা জারি করা হলে, আইন-শৃঙ্খলা, আইন এবং জমি সংক্রান্ত বিষয়গুলির নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে চলে যায়।