লকডাউন সাধারণ মানুষের জীবন থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশ, প্রতিটা ক্ষেত্রে এক বিস্তর প্রভাব ফেলেছে। পাল্টে গিয়েছে সমাজ, পাল্টে গিয়েছে পরিস্থিতি, আবার পাল্টে গিয়েছে মানুষের জীবনের সহজ অভ্যাস। যার প্রথম কোপটাই পড়েছিল বিনোদন জগতে। লকডাউনের আগে যখন প্রাথমিক পর্যায়ে একে একে মানুষের জমায়েত বন্ধ করার উপর নজরদারি করছিল কেন্দ্রীয় সরকার, তখন প্রাথমিকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল প্রেক্ষাগৃহ। প্রথম কোপ পড়েছিল সিনেমাহল ও শপিংমলে। তারপর ধাপে ধাপে সমস্তটাই বন্ধ হয়ে যায়। অতিমারী কাটিয়ে মানুষ যখন আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে, তখন তাঁদের কাছে জীবন যাপনের জন্য ন্যূনতম সামগ্রী হাতের কাছে পাওয়াটাই ছিল স্বপ্নের মত। সেখানে আলাদা করে বিনোদনের কথা ভেবে দেখেননি হয়তো অনেকেই।
প্রাণ বাঁচিয়ে কেবলমাত্র অফিস স্কুল কলেজটুকুই বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন প্রতিটা মানুষ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে অথৈ জলে পড়েছিল বিনোদন জগত, বন্ধ শুটিং, একের পর এক ছবির কাজ স্থগিত, ইউনিট বসে রয়েছে, মানুষকে ফিরতে হবে প্রেক্ষাগৃহে নয়তো সিনেমা মুক্তি পেলে কোনও লাভ নেই। তবে থেকে শুরু হয়েছিল অপেক্ষায়, দিনগুলা একে একে ছবি মুক্তি পাওয়া ধীরে ধীরে মানুষের প্রেক্ষাগৃহে আনাগোনা শুরু হয়। সিনে বিশেষজ্ঞদের সেই মুহূর্তে দাবি ছিল মানুষ এখন ওটিটিতে অনেক বেশি অভ্যস্ত তাই আলাদা করে প্রেক্ষাগৃহে আসার বিষয়ে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না অধিকাংশ দর্শকই। তবে থেকেই শুরু হয়েছিল লড়াই, টিকে থাকার লড়াই। দর্শকদের আবারও প্রেক্ষাগৃহে ফিরিয়ে আনার লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে সাফল্য পেতে কেটে গিয়েছেন প্রায় দুটো বছর।
অবশেষে শেষ সপ্তাহে অর্থাৎ ১১ থেকে ১৩ আগস্ট জনজোয়ার দেখা দিল গোটা দেশের সিনেমা হলে। একের পর এক ভাল ছবি চলছে বর্তমানে। একদিকে রজনীকান্তের জেলার, অন্যদিকে রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি, তেমনি চলছে অক্ষয় কুমার অভিনীত OMG 2, আবার পাল্লা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন গদর ২। পাশাপাশি প্রতিটি স্থানীয় ইন্ডাস্ট্রিতেও একইভাবে মুক্তি পেয়েছি বড় বড় ছবি। যার ফলে অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহ উক্ত তিন দিনে ছিল হাউসফুল যে দৃশ্য গত কয়েক বছর ধরে দেখার অপেক্ষায় দিন গুনে ছিলেন পেক্ষাগৃহের মালিকেরা ছবি নির্মাতারা অভিনেতা অভিনেত্রীরা গোটা ইন্ডাস্ট্রির কর্মীরা। সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসা এক রিপোর্ট বলছে এই তিন দিনে ২.১০ কোটি দশক প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছে। এখানে ইতি নয়, পাশাপাশি এই তিন দিনে প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ভারতের প্রেক্ষাগৃহ। ১০ বছরে এই ছবি কখনও দেখা যায়নি। আর এই সপ্তাহই এবার প্রমাণ করল, দর্শক-সিনেমাপ্রেমীরা আবারও বড়পর্দার টানে প্রেক্ষাগৃহে ছুটছেন।