খাওয়া-দাওয়া ব্যাপক ভাবে প্রভাব ফেলে হার্টের স্বাস্থ্যের উপর। আজকাল প্রক্রিয়াজাত, প্যাকেটজাত খাবারের প্রতি মানুষের ঝোঁক বেশি। তাতে নুন-চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। তার সঙ্গে থাকা অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এই ধরনের উপাদান যত কম পরিমাণে খাওয়া যায়, ততই ভাল। অন্তত আপনি যদি কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি এড়াতে চান, তাহলে পরিশোধিত চিনি, অতিরিক্ত নুন ও অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট থেকে দূরে থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সুষম আহার হার্টের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখার একমাত্র সহজ উপায়। সেই সুষম আহারের মধ্যে সঠিক পরিমাণে নুন-চিনি ও ফ্যাট থাকবে। তাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থও থাকবে। এসব উপাদানগুলো সঠিক পরিমাণে খাদ্যতালিকায় থাকায় দরকার। এগুলো বেশি খেলেই আপনার হার্টের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
আজকাল অনেকেই খাদ্যতালিকায় থেকে পরিশোধিত চিনিকে কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। এটাও ঠিক যে, চিনি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি খেলে এটি ওজন বাড়ায়, ইনসুলিনের হরমোনের কার্যকারিতার প্রভাব প্রভাব ফেলে এবং মেটাবলিক সিন্ড্রোমের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এগুলোই ভবিষ্যতে হৃদরোগের ঝুঁকি ডেকে আনে। এমনকী রক্তে শর্করার মাত্রা এবং হাইপারটেনশনের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এই দুই বিষয়ও হৃদরোগের জন্য দায়ী।
অন্যদিকে, নুন আমাদের দেহের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু আপনি যখন অত্যধিক পরিমাণে নুন গ্রহণ করেন, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায়। প্রক্রিয়াজাত এবং বাইরের খাবারে অতিরিক্ত পরিমাণে নুন থাকে। এটি উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী। তাছাড়া অতিরিক্ত সোডিয়াম জল ধারণ করে, এটি হৃদপিণ্ড ও রক্তনালির উপর চাপ সৃষ্টি করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই অতিরিক্ত চাপ ধমনীকে দুর্বল করে দেয়। এর জেরেই হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার রোগ দেখা দেয়।
একই ঘটনা ঘটে যখন আপনি ফ্যাট জাতীয় খাবার বেশি খান। ফাস্ট ফুড, ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার সবচেয়ে বেশি স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে। এগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাক এবং অন্যান্য সমস্যা ডেকে আনে।
হৃদরোগ এড়াতে গেলে নুন, চিনি ও ফ্যাট—এই তিনটি জিনিসই সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে। অত্যধিক পরিমাণে নুন, চিনি ও ফ্যাট আপনার হার্টের জন্য বিপজ্জনক। সুষম আহারে এই সব উপাদান সঠিক পরিমাণে রাখলেই আপনি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন।