নয়া দিল্লি: চাঁদের মাটিতে লেখা ভারতের নাম। চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) মিশনের সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাস তৈরি করেছে দেশ। চাঁদের মাটিতে পা রাখার ক্ষেত্রে চতুর্থ হলেও, দক্ষিণ মেরুতে অবতরণের দিক থেকে ‘ফার্স্ট বয়’ ভারত। বুধবার সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে সফট ল্যান্ডিং করে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম (Lander Vikram)। অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পর, ধুলোর ঝড় থামতেই ল্যান্ডারের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসেছে রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। এবার বাকি কাজ সারবে এই রোভারই। ১৪ দিন ধরে চাঁদের দক্ষিণে মেরুর মাটি, খনিজের নমুনা সংগ্রহ করবে। জলের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখবে। কিন্তু এরপর কী হবে? চাঁদ থেকে কি আবার পৃথিবীর বুকে ফিরে আসবে ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান?
চাঁদে মোট ১৪ দিন কাটাবে ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। যদিও চাঁদের সময় অনুযায়ী তা মাত্র একদিন। এরপর কী হবে? চাঁদে দিনের আলোয় নেমেছে ল্য়ান্ডার বিক্রম। ১৪ দিন চাঁদে দিনের আলো থাকবে, এই সময়ের মধ্যেই রোভারকে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। চাঁদে রাত হলে, আপনাআপনিই কাজ করা বন্ধ করে দেবে রোভার ও ল্যান্ডার। কারণ, সেই সময়ে সৌরশক্তি থাকবে না, আর সৌরশক্তি ছাড়া ল্যান্ডার-রোভার অচল।
এছাড়াও চাঁদে যত রাত বাড়ে, ততই তাপমাত্রাও কমতে থাকে। মাইনাস ১৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি তাপমাত্রা পৌঁছতে পারে। এই চরম তাপমাত্রায় ল্যান্ডার ও রোভারের কাজ করা অসম্ভব। তাই চাঁদে দিন থাকতে থাকতেই রোভার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করবে এবং তা ল্য়ান্ডারে পাঠাবে। সেই তথ্য রিলে করে ইসরোর কম্য়ান্ড সেন্টারে পাঠাবে ল্যান্ডার। রোভারের সঙ্গে সরাসরি কোনও যোগাযোগ থাকবে না ইসরো।
চাঁদে ১৪ দিন পূরণের পর ল্যান্ডার বিক্রম বা রোভার প্রজ্ঞান- কোনওটিই আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না। প্রপালশন মডিউল, যা চাঁদের কক্ষপথে ঘুরছে, তাও ফিরে আসবে না। ইসরোর তরফে ল্য়ান্ডার-রোভার ফিরিয়ে আনার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেই জানানো হয়েছে। এগুলি চাঁদের বুকেই রয়ে যাবে। তবে চাঁদের চরম রাত্রি যদি কাটিয়ে ফেলতে পারে ল্য়ান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান, তবে চাঁদে ফের দিন হলে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করবে ল্যান্ডার ও রোভার।