নয়া দিল্লি: চাঁদ আর অধরা রইল না। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) অবতরণ করিয়ে ইতিহাস গড়ল ভারত। বুধবার নির্ধারিত সময় সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে সফট ল্যান্ডিং করে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। কিন্তু এবার? চন্দ্রযানের কাজ তো এখানেই শেষ নয়। এর পরবর্তী ধাপে কী কী করবে চন্দ্রযান, তা জানাল ইসরো (ISRO)। ল্যান্ডার বিক্রমের (Lander Vikram) সুরক্ষিত অবতরণ করার পর তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান (Rover Pragyan)। ল্যান্ডার যে জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, এই রোভার সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে।
প্রথমে পরিকল্পনা ছিল, চাঁদে অবতরণের আধঘণ্টার মধ্যে ল্যান্ডার বিক্রমের বুক থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। এরপরে তা ল্যান্ডারের আশেপাশের মাটির নমুনা সংগ্রহ করবে। যদিও ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, রোভারের লঞ্চ বা বেরিয়ে আসতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে। এর কারণ হল ধুলোর ঝড়। ল্যান্ডার বিক্রম চাঁদের মাটিতে অবতরণ করার সময় যে ধুলো উড়েছিল, তা কমতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছে।
Chandrayaan-3 Mission:
Chandrayaan-3 ROVER:
Made in India 🇮🇳
Made for the MOON🌖!The Ch-3 Rover ramped down from the Lander and
India took a walk on the moon !More updates soon.#Chandrayaan_3#Ch3
— ISRO (@isro) August 24, 2023
চাঁদে কেন এত ধুলো, তাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের কথায়, চাঁদে মাধ্য়াকর্ষণ শক্তি থাকলেও, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির তুলনায় তা মাত্র এক চতুর্থাংশ হওয়ায়, ধুলোকণা আবার মাটিতে পড়ে মিশে যেতে তুলনামূলকভাবে অনেকটাই বেশি সময় লাগে।
বিজ্ঞানীদের চিন্তা ছিল, যদি ধুলোর ঝড় থামার আগেই রোভার প্রজ্ঞান বেরিয়ে আসে, তাহলে তা রোভারে লাগানো ক্যামেরা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ, যা অত্যন্ত সূক্ষ, তার ক্ষতি করতে পারে। ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ আগেই জানিয়েছিলেন যে রোভার প্রজ্ঞানের ল্যান্ডার থেকে বেরতে কয়েক ঘণ্টা থেকে একদিন অবধি সময় লেগে যেতে পারে। সেই তুলনায় কম সময়ই লেগেছে রোভারের বেরিয়ে আসতে।
চন্দ্রযান-৩ অবতরণের পরই ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ বলেন, “কয়েক ঘণ্টাতেই রোভারটি বেরিয়ে আসবে। কখনও কখনও তা একদিন সময়ও নিতে পারে…রোভার বেরিয়ে আসলে তা মূলত দুটি গবেষণা করবে। মোট ১৪ দিন ধরে গবেষণা করবে রোভার প্রজ্ঞান।”
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, প্রজ্ঞান রোভার প্রথমেই সৌর বিন্যাস বিশ্লেষণ করবে। আপাতত ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে একটি তার দিয়ে যুক্ত থাকবে রোভারটি। পরে চাঁদের মাটিতে রোভার স্থিতিশীল হয়ে গেলে, সেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এরপরই শুরু হবে আসল গবেষণা। ১৪ দিন, যা চাঁদের একদিনের সমান, তার মধ্য়ে চাঁদের মাটি ও তাপমাত্রা নিয়ে গবেষণা করবে। চাঁদের মাটিতে সত্যিই জলের অস্তিত্ব রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখবে রোভার। চাঁদে রাত শুরু হতেই সৌরশক্তিতে পরিচালিত রোভার প্রজ্ঞানও বন্ধ হয়ে যাবে।