নয়া দিল্লি: কখনও আইএএস (IAS) বদলি, তো কখনও অন্যান্য প্রশাসনিক ইস্যু। দড়ি টানাটানি চলছিল। দিল্লির (Delhi) দুই সরকারের ক্ষমতার লড়াইয়ের জল গড়িয়েছিল আদালতে। চলছিল মামলা। প্রসঙ্গত, সবথেকে বেশি সমস্যা চলছিল দিল্লি সরকারের (Delhi Government) প্রশাসনিক ও আইনি ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে। দিল্লির রাজ্য সরকাররের অভিযোগ ছিল অহেতুক ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নানা বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর। এই লেফটেন্যান্ট গভর্নর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে থাকেন। দিল্লি সরকারের অভিযোগ, কথায় কথায় হস্তক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Goverment)। অর্থাৎ লেফটেন্যান্ট গভর্নর। বিশেষ করে অফিসার বদলি নিয়ে মত বিরোধ দেখা দেয়। এই সমস্যার সমাধানেই মামলা চলে আদালতে। এই মামলাতেই এদিন বড় রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ।
কতটা ক্ষমতা থাকছে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে?
যে বেঞ্চের তরফে এই রায় দেওয়া হয়েছে সেখানে রয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি, বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি পিএস নরসিমহা। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লি সরকারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে। যা নিয়ে শোরগোল রাজধানীর প্রশাসিনক মহলে। শীর্ষ আদালতের তরফে সাফ বলা হয়, “গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় প্রকৃত প্রশাসনিক ক্ষমতা অবশ্যই নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকা উচিত”। এমনিতেই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলার দায়ভার থাকে কেন্দ্রীয় সরকারের উপরেই। নয়া রায়ে সেই সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। অর্থাৎ দিল্লির পুলিশের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র দফতর। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জমির বিষয়টি। সেটিও দেখবে কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি সমস্ত প্রশাসনিক বিষয়, এমনকি দিল্লি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকছে আইএএস সহ দিল্লির সমস্ত সার্ভিসই।
ঠিক কী বলল শীর্ষ আদালত?
এই রায় দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে রাজ্যের শাসনব্যবস্থা যেন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে চলে না যায়। গণতান্ত্রিক নির্বাচিত একটি সরকারকে যদি নিজের আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার না দেওয়া হয়, তাহলে জবাবদিহিতার পুরো বিষয়টি অকেজো হয়ে যাবে। আধিকারিকরা যদি মনে করেন যে তাঁদের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেক্ষেত্রে জবাবদিহিতার বিষয়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রভাব পড়বে শাসনব্যবস্থায়।”
ঘটনার সূত্রপাত কোথায়?
দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবালের আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের মে’তে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। দিল্লির রাজ্য সরকারের হাস থেকে বেশ কিছু জন পরিষেবার ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সবথেকে বেশি সমস্যা বাড়তে থাকে আমলাদের বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে। এছাড়াও প্রায়শই দিল্লির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলেও পুলিশি পদক্ষেপ নিয়েও চলে টানাপোড়েন। তারপর থেকেই জল গড়ায় আদালতে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে দিল্লির আপ সরকার তাঁদের বড় জয় হিসাবেই দেখতে চাইছে।