ভুবনেশ্বর: ওড়িশার গুন্ডালবা গ্রামের বাসিন্দা বিচিত্রানন্দন বিসওয়াল। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি বেশি পরিচিত ‘বিচি ভাই’ নামে। সকলেই তাঁকে চেনেন, ওড়িশা উপকূলে অলিভ রিডলি কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য। সেই ১৯৯৬ সাল থেকে এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন বিচি ভাই। এক সময় ওড়িশা উপকূলে লক্ষাধিক কচ্ছপের মৃত্যু হত। এখন ‘বিচি ভাই’-এর উদ্যোগে সেই সংখ্যা হাজারের নীচে নেমে এসেছে। কচ্ছপদের বাঁচাতে সারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তিনি।
কীভাবে কচ্ছপ সংরক্ষণের কাজ করেন তিনি? যখন কচ্ছপরা ডিম পেড়ে সমুদ্রে ফিরে যায়, প্রথমে সেই ডিমগুলি চিহ্নিত করেন ‘বিচি ভাই’। তারপর, সেই ডিমগুলি সংগ্রহ করে তিনি সংরক্ষণ করেন। তারপর নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ডিম থেকে বাচ্চা বের হলে, তাদের আবার সমুদ্রে ছেড়ে দেন ওড়িশার এই বাসিন্দা। এই ভাবে তাঁর গোটা জীবনই কচ্ছপদের রক্ষার্থে উৎসর্গ করেছেন তিনি। এমনকি, এই কচ্ছপদের রক্ষার নেশায় বিয়েও করেননি তিনি। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের এই কাজে তাঁর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন স্থানীয় যুবকরাও।
কিন্তু, কীভাবে এই কর্মযজ্ঞে সামিল হলেন বিচি ভাই? তিনি বলেছেন, “সালটা ছিল ১৯৯৬। সেই সময় আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়তাম। বিকেলে সমুদ্রের পারে ঘুরতে যেতাম। সেই সময় দেখতাম যাযাবররা নির্বিচারে কচ্ছপ হত্যা করছে। সেই সময় থেকেই আশপাশের সকলকে কচ্ছপদের গুরুত্ব জানাতে শুরু করি। সামুদ্রিক পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ কচ্ছপ। আজাদির অমৃত মহোৎসবের সময় সকলকে আমার একটাই অনুরোধ, সমুদ্র হোক বা গাছ, আমাদের লক্ষ্য হোক পরিবেশ রক্ষা করা। তাহলেই সকলে বাঁচবে। আর এইভাবেই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে আমরা কিছু হলেও দিয়ে যেতে পারব।”