যে বহুতলের অফিসে বসে কাজ করেন, তার জন্য কতগুলো গাছ কাটা পড়েছে? সেটুকু ভাবার ফুরসত হয় ক’জনের! সকালে ঘুম ভেঙেই পেটের টানে ইঁদুর দৌড়। ১০টা-৫টার অফিস অথবা ব্যবসার খাতায় হিসেব মেলানো, আম জনগণের দিনযাপণের ছবি মোটের উপর এরকমই। তবে সবুজের স্বপ্ন নিয়েই ঘুম ভাঙে এমন মানুষও আছেন। সকালে উঠে তথাকথিত কাজে নয়, গাছ লাগাতে যান তিনি। একদিন নয়, দিনের পর দিন। ৪২ বছর ধরে গাছ লাগাচ্ছেন তিনি। তিনি ভারতের ‘ফরেস্ট ম্যান’ যাদব পায়েং। তাঁকে মুলাই নামেই চেনেন সবাই।
গাছ লাগাতে লাগাতে একটা আস্ত জঙ্গল তৈরি করে ফেলেছেন মুলাই। ১৩৬০ একর জমি তিনি ঢেকে ফেলেছেন সবুজে। তাঁর সেই জঙ্গলে আশ্রয় পেয়েছে শতাধিক হাতী ও অন্যান্য পশু। তার নামেই জঙ্গলের নাম- মুলাইয়ের জঙ্গল। অসমের জোড়হাটে রয়েছে সেই বনান্তর। প্রকৃতির কোলেই তাঁর বাস। তিনি জানান, প্রতিদিন সকালে উঠে নৌকায় সব জিনিসপত্র চাপিয়ে সোজা চলে যান জঙ্গলে। প্রকৃতির কোলেই বাস তাঁর পরিবারেরও।
২০১৫ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে মুলাইয়ের ইচ্ছা, ‘আজাদির অমৃত মহোৎসব’ পালনে ১৩০ কোটি ভারতবাসীই গাছ লাগান। নিয়ম করে কজন গাছ লাগাতে পারেন, সেই প্রশ্ন রয়ে গেলেও মুলাই যে দেশের এক প্রান্তে বসে এক অনুপ্রেরণার গল্প বুনছেন, তা বলাই যায়।