নয়া দিল্লি: ভারতীয় সংস্কৃতি বা ঐতিহ্যের সঙ্গে ঘুড়ি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিশুদের লাটাই-ঘুড়ির উৎসাহে বর্তমান যুগে কিছুটা ভাটা পড়লেও বিভিন্ন উৎসবে ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ আছে আজও। ব্যতিক্রম নয় স্বাধীনতা দিবস। আজও স্বাধীনতা দিবসের আগে বেড়ে যায় ঘুড়ির বিক্রি। তৈরি হয় তেরঙা ঘুড়ি। ১৫ অগস্টের সকালে অনেক জায়গাতেই ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়। কিন্তু অনেকেই জানেন না এই বিশেষ দিনে ঘুড়ির ওড়ানোর রীতি ঠিক কবে থেকে শুরু হল।
মূলত দিল্লি, মোরাদাবাদ, লখনউ, বরেলির মতো জায়গায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে মুক্তির উদযাপন হয় ঘুড়ি উড়িয়ে। এই প্রবণতা নিছকই আনন্দের জন্য নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস।
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ভারতেই শুরু হয়েছিল এই রীতি। স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গেও রয়েছে ঘুড়ি ওড়ানোর যোগ। মূলত ১৯২৮ সালে ব্রিটিশ প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সময় থেকেই এই রীতি শুরু হয়। সেই সময় বহু সংগ্রামীর মুখে শোনা যেন স্লোগান, ‘সাইমন গো ব্যাক।’ সেই স্লোগান এতটাই জনপ্রিয় হয়ে যায় যে, অনেকেই ঘুড়িতে ওই স্লোগান লিখে আকাশে ওড়াতে শুরু করেন। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে ঘুড়ি হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের প্রতীক।
সেই রীতি আজও বজায় আছে। আজও ঘুড়ি উড়িয়ে উদযাপন করা হয় মুক্তির দিন তথা স্বাধীনতার দিন। ছোট-বড় সবাই বাড়ির ছাদ থেকে ঘুড়ি ওড়ান এই দিনে। এমনকী দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে ঘুড়ি ওড়ানোর। হিন্দি গান চালিয়ে সেই প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন অনেকেই। শুধু স্বাধীনতা দিবস নয়, মকর সংক্রান্তি, বসন্ত পঞ্চমীর মতো দিনগুলিতেও ঘুড়ি ওড়াতে পছন্দ করেন অনেকে।