কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) বাংলা বিভাগের ছাত্রের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই উঠে আসছে বাংলার আরেক মেধাবী ছাত্রের রহস্য মৃত্যুর খবর। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে বিজয়ওড়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলে রহস্যমৃত্যু হয় মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা সৌরদীপ চৌধুরীর। পরিবারের তরফে প্রাথমিক অনুমান, ব়্যাগিংয়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই পড়ুয়ার। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী এবার এ রাজ্যের পাশাপাশি ভিন রাজ্যে শুরু হয়েছে ব়্যাগিংয়ের দাপাদাপি? সূত্রের খবর, ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে মৃত ছাত্রের পরিবার।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সৌরদীপ। পেয়েছিল ৭৫ শতাংশ নম্বর। তারপরই অন্ধপ্রদেশের কে এল বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হয় বাংলার এই পরিবার। জুলাইয়ের ১৭ তারিখ মেদিনীপুর থেকে গুন্টুর যায় সৌরদীপ। সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর বাবাও। সপ্তাখানেকের মধ্যেই আসে মৃত্যুর খবর। সূত্রের খবর, ২৪ জুলাই সৌরদীপের বাবা সুদীপ চৌধুরীর কাছে আসে ফোন। জানানো হয় ছেলের মৃত্যুর খবর। বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা হস্টেলের ১১ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে সৌরদীপের। খবর পাওয়া মাত্রই অন্ধ্রপ্রদেশের উদ্দেশে পাড়ি দেয় তাঁর পরিবারের লোকজন। বাংলায় নিয়ে আসা হয় দেহ।
ছেলের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নামে পরিবারে। কিন্তু, মৃত্যু ঘিরে উঠে যায় একগুচ্ছ প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সৌরদীপের বাবা সুদীপ চৌধুরী। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ ছিল, কোনওভাবেই পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়নি সৌরদীপের। এর পিছনে ব়্যাগিংয়েরই গন্ধ পাচ্ছে গোটা পরিবার। তাঁদের সাফ দাবি, খুন করা হয়েছে তাঁদের ছেলেকে। এও জানাচ্ছেন তাঁরা যখন দেহ আনতে যান তখন তাঁর দেহে ছিল নতুন জামা। গালে ছিল শুধু একটা কাটা দাগ। পড়ে গিয়ে মৃত্যুর কোনও চিহ্নই ছিল না। ঘটনায় সুদীপবাবু বলছেন, “আমরা যখন যাই তখন আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে যেতে দেওয়া হয়নি, হস্টেলে যেতে দেওয়া হয়নি। থানায় যেতে চাইলেও আটকানো হয়। ময়নাতদন্তও করতে দিচ্ছিল না। ১১ তলা থেকে পড়ার কোনও চিহ্নও কিন্তু ওর শরীরে দেখতে পাওয়া যায়নি। শরীরে কোনও আঘাতের দাগ ছিল না। নতুন জামা কাপড় পরে ছিল। শুধু গালে একটা কাটা দাগ দেখতে পাই।” ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়ে আগেই গুন্টুর জেলার তাডেপল্লী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। শনিবার তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন বলে খবর।