কলকাতা: দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর চাকরি পেয়েছেন প্রিয়ঙ্কা সাউ। ঘুচেছে বেকারত্বের জ্বালা। এখন তিনি বাঘাযতীন বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা। কিন্তু একাদশ-দ্বাদশের ইংরেজি শিক্ষিকা প্রিয়ঙ্কার চাকরি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছিল। স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য, প্রিয়ঙ্কার চাকরি পাওয়ার কথা নয়। সেই নিয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এসএসসি। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। তবে ডিভিশন বেঞ্চ এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশই বহাল রাখল। একক বেঞ্চের নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ করতে চায় না আদালত। ফলে একক বেঞ্চের নির্দেশ মতো প্রিয়ঙ্কা সাউয়ের শিক্ষক পদে চাকরি বহাল থাকছে।
প্রসঙ্গত, প্রিয়ঙ্কা সাউয়ের চাকরি সংক্রান্ত মামলাটি প্রথমে ছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। সেখানে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কলমের খোঁচায় মুখে হাসি ফোটে প্রিয়ঙ্কার। তাঁকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, ২৯ অক্টোবর অর্থাৎ নির্দেশ দেওয়ার এক মাসের মধ্যে নিয়োগ নিশ্চিত করার। একক বেঞ্চের নির্দেশ মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করে এসএসসি। কমিশনের তরফে প্রিয়ঙ্কাকে চাকরির সুপারিশপত্রও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর সব প্রক্রিয়া মেনে বাঘাযতীন বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগ দেন।
কিন্তু, এখন স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য, প্রিয়ঙ্কার ওই পদে চাকরি করার কথা নয়। তাদের যুক্তি, ক্যাটেগরিভিত্তিক বিস্তারিত মেধাতালিকা যাচাইয়ের সময় দেখা গিয়েছে ওই চাকরির সুযোগ প্রিয়ঙ্কার পাওয়ার কথা নয়। তবে এদিন হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই মামলায় আগেই একক বেঞ্চের নির্দেশ মেনে নিয়েছিল কমিশন। শুধু তাই নয়, কমিশন সেই নির্দেশ কার্যকরও করে দেয়। এমন অবস্থায় তাই নতুন করে এই আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা কী, তা নিয়ে প্রশ্ন বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের। আদালত এদিন এও জানিয়ে দিয়েছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর কোনও হস্তক্ষেপ করবে না ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পুরুষ ও মহিলা ভিত্তিক মেধাতালিকা বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, প্রিয়ঙ্কার চাকরির ক্ষেত্রে কোনও ভুল নেই। ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, একক বেঞ্চে অন্য কথা ছিল কমিশনের। এক্ষেত্রে চাকরি দেওয়ার পর কেন আপত্তি?’ একইসঙ্গে হাইকোর্ট অবশ্য এও জানিয়েছে, অন্য কোনও মামলায় একই কারণ দেখিয়ে কেউ এলে তখন একক বেঞ্চ নতুন করে বিচার করবে।