কলকাতা: যাদবপুরকাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির যুব মোর্চার তরফে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে শহরে। বিজেপির আবেদন ছিল বৃহস্পতিবার মিছিল করতে দেওয়া হোক। কিন্তু পুলিশ তাতে সায় দেয়নি। শেষে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে মামলার শুনানি ছিল। তাতে বৃহস্পতিবারের বদলে শুক্রবার বিজেপির যুব মোর্চাকে মিছিলের অনুমতি দিয়েছে আদালত। আদালতের নির্দেশ, দুপুর আড়াইটে থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে মিছিল করতে হবে। বিজেপির আগের পরিকল্পনা ছিল, গড়িয়াহাট থেকে এইট বি পর্যন্ত মিছিল করার। তবে হাইকোর্ট গড়িয়াহাটের পরিবর্তে গোলপার্ক থেকে এইট বি পর্যন্ত মিছিল করতে অনুমতি দিয়েছে। একইসঙ্গে বিভাগীয় ডিসিকে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত নির্দেশ দিয়েছেন যাতে মিছিলের সময় পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত রাখা হয়।
উল্লেখ্য, বিজেপির যুব মোর্চার তরফে যখন পুলিশের কাছে মিছিলের আবেদন জানানো হয়েছিল, তখন পুলিশ বৃহস্পতিবার মিছিলের ক্ষেত্রে আপত্তি জানায়। পুলিশের বক্তব্য ছিল, এর আগে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ গাইডলাইন করে দিয়েছিল, কর্মসূচির ১৫ দিন আগে আবেদন করতে হবে। সেই যুক্তিতে বৃহস্পতিবারের আর্জি ফেরায় পুলিশ।
এদিন হাইকোর্টে শুনানির সময় বিজেপির আইনজীবী প্রশ্ন করেন, শাসক দলের কোনও কর্মসূচির সময় এমন ক্ষেত্রে কতদিন আগে অনুমতি নেওয়া হয়? এর পাশাপাশি বিচারপতি মান্থা যে অনলাইন আবেদনের বন্দোবস্তের কথা বলেছিলেন, তাও চালু হয়নি বলে অভিযোগ বিজেপির। যদিও রাজ্যের তরফে জানানো হয়, অনলাইন আবেদনের পদ্ধতি চালু হয়েছে। সেক্ষেত্রে রাজ্যের যুক্তি, ছুটির দিনে এই কর্মসূচি করা হোক। ছুটির দিন ছাড়া অন্য কোনও দিনে মিছিল হলে যানজট তৈরি হবে। অফিসের দিনে এই রাস্তা দিয়ে প্রায় হাজার পাঁচেক লোকের মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলেই যুক্তি দেখায় রাজ্য।
সেক্ষেত্রে বিজেপির আইনজীবী তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের উদাহরণ দেন। বলেন, ‘গত ২১ জুলাই শুক্রবার ছিল। সেদিন গোটা কলকাতা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল শাসক দলের মিছিলের জন্য। তখন কীভাবে অনুমতি দেওয়া হল?’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি বলেন, ‘এদের (বিজেপিকে) বাধা দিলে, পরবর্তী সময়ে অন্যান্য দলগুলিকেও কিন্তু মিছিল শনিবারই করতে হবে। একজনের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম, আবার অন্যজনের ক্ষেত্রে আলাদা… এমন হতে পারে না।’ বিচারপতি এও বলেন, রাজ্য বিরোধীদের নির্দেশ দিতে পারে না। পুলিশকে আগে থেকে জানানো হবে এবং সেই মতো পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।