কলকাতা: চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একাধিক বাঙালির নাম। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পডুয়া তাঁরা। তালিকায় আছেন এ রাজ্যের শিবপুর IIEST, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব স্পেস সায়েন্স টেকনোলজির (IISST) কৃতীরা। আছেন নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ, ডন বসকো স্কুল, জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কল্যাণী গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শিলিগুড়ি এসআইটি, বহরমপুর কেএন কলেজ, সল্টলেক টেকনো মেনেরও মেধাবী। এরকমই একজন ইসরোর বিজ্ঞানী নীলাদ্রি মৈত্র। বাংলা মিডিয়ামে ছোট থেকেই পড়াশোনা। সেই নীলাদ্রি টিভি নাইন বাংলাকে জানালেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।
নীলাদ্রি মৈত্রের কথায়, “চার মাস আগে লঞ্চ করে। তার আগে ৮০ দিনের ক্যাম্পেন চলে। সেই সময় আমার মূল কাজ ছিল। কারণ আমি লঞ্চ ভেহিক্যাল টিমের সদস্য। সে সময় আমাদের কাজের কোনও শিডিউল টাইম থাকত না। ২০ ঘণ্টার শিফটেও কাজ করেছি। আমার মতো হাজার হাজার মানুষের প্রচেষ্টায় এই সাফল্য।”
নীলাদ্রি জানালেন, বিক্রমের ভিতর থেকে রোভার প্রজ্ঞান বেরিয়ে আসার পর কীভাবে সে এবার কাজ করবে। জানালেন, আপাতত নানা সায়েন্টিফিক ডেটা পাঠাবে প্রজ্ঞান। একেবারে এক্সরের মতো সেসব এসে পৌঁছবে ইসরোর কাছে। প্রজ্ঞানের সঙ্গে ক্যামেরা আছে। ফলে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর নানা ছবিও এসে পৌঁছবে পৃথিবীতে।
চন্দ্রযান-২ এরও মিশন-মেম্বার ছিলেন নীলাদ্রি। লঞ্চ ভেহিক্যাল টিমের হয়েই কাজ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, চন্দ্রযান-২ পুরোপুরি সফল না হলেও, অনেক কিছু শিখিয়েছে। সেই শিক্ষা দিয়েছে নতুন সাফল্য। নীলাদ্রির কথায়, “সফল না হওয়া বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির একটা অংশ মাত্র। এটা হয়ই। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল, ব্যর্থতা থেকে আমরা কী শিখছি। আমরা সেই ব্যর্থতার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পেরেছিলাম। সাফল্য এখন আমাদের হাতে আছে।”
উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের ছেলে নীলাদ্রি। প্রথমে স্বামীজী সংঘ স্কুল থেকে তাঁর লেখাপড়া। তারপর রাজবল্লভপুর স্কুলে। এরপর তিরুবনন্তপুরমে ইসরো অ্যাফিলিয়েটেড ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব স্পেস সায়েন্স টেকনোলজিতে পড়াশোনা। সেখানে বিটেকের পর ইসরোয় ২০১৩ সালে যোগদান।
কেউ ইসরোয় কাজ করতে চাইলে কীভাবে চাকরি পেতে পারেন, সে কথাও জানালেন নীলাদ্রি। বললেন, “কাগজে বিজ্ঞাপন বেরোয়। বিটেক, এমটেক যথেষ্ট বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। পরীক্ষাও হয় ইসরোর জন্য। এরপর ইন্টারভিউ।” একইসঙ্গে নীলাদ্রি বলেন, “মনে কখনও কোনও লিমিট, কোনও দ্বিধা রাখলে চলবে না যে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেছি বলে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করতে পারবে না।”