কলকাতা: র্যাগিং নিয়ে অনেক সতর্কবার্তা, কমিটি তৈরির পরও যাদবপুরের ঘটনায় চমকে উঠেছে গোটা রাজ্য। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরে কোন অন্ধকার লুকিয়ে আছে, সেই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, দিনে দিনে র্যাগিং-এর ঘটনা বাড়ছে। শুধুমাত্র এক জায়গায় নয়, একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর যে বৈঠক ছিল, সেই মঞ্চ থেকেই র্যাগিং রুখতে হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি জানিয়েছেন, লালবাজারের ওই নম্বর খোলা থাকবে সারা রাত। অভিযোগকারীদের নাম, ফোন নম্বর ও পরিচিয় গোপন রেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
র্যাগিং প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “যাদবপুরে যে ঘটনা ঘটেছে। তাতে আমাদের চোখ খুলে গিয়েছে। অনেকদিন এগুলো বন্ধ ছিল। আবার হয়ত এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যা ভয়ে জানায় না পড়ুয়ারা।” তিনি আরও বলেন, “বাবা-মা কত আশা নিয়ে পড়তে পাঠায়, কত ভাল রেজাল্ট করে এই সব জায়গায় ছেলেমেয়েরা ভর্তি হতে আসে। আর তাদের ওপর এই সব অত্যাচার হয়।”
তবে তিনি যখন ছাত্রী ছিলেন, তখন এত র্যাগিং-এর ঘটনা ঘটত না বলেই দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, “আমাদের সময় এসব এত ছিল না। যত দেশ উন্নত হচ্ছে, কারও কারও অধঃপতন হচ্ছে। মনে রাখবেন ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়াটাই যোগ্যতা নয়, মানুষ হওয়া দরকার।”
উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, ১৯৭০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে একাধিক বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। তথ্য বলছে, তাঁর ছাত্রজীবনকালে বাংলায় ক্ষমতায় ছিল যুক্তফ্রন্ট, কংগ্রেস। বাম আমলের শুরুর দিকেও মমতা ছাত্রী ছিলেন বলেই জানা যায়। আর ছাত্র রাজনীতি থেকেই পথচলা শুরু আজকের মুখ্যমন্ত্রীর। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। এদিন মমতার মন্তব্য শুনে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মমতা তো ঠিকই বলেছেন। বামেদের আমলে প্রশাসন ছিল, কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হত। এখন প্রশাসন নেই। কলেজে বহিরাগতদের দাপাদাপি বাড়ে। র্যাগিং-এর জেরে ছাত্রের মৃত্যু হয়। জয়প্রকাশ মজুমদারও আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন।”