কলকাতা: রাজ্যে শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা রকম কটাক্ষ করে থাকেন বিরোধীরা। কর্মসংস্থান নিয়েও তৃণমূল সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়। এবার শিল্প ও বাণিজ্যে জোর দিতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। শুধু পরিকল্পনাই নয়, তা বাস্তবায়িত করার জন্য অর্থের ব্যবস্থাও করছে রাজ্য। নবান্নে সূত্রে খবর, বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ২৫০০ কোটি ঋণ নিচ্ছে রাজ্য, যা দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে রাজ্যের পরিকাঠামো। মূলত সড়ক, রেল ও জলপথের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও মজবুত এবং উন্নত করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে বাড়বে কর্মসংস্থানও। শুক্রবার বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রতিনিধির সঙ্গে নবান্নে বৈঠকও সেরে ফেলেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
পরিকাঠামো এভাবে ঢেলে সাজানো হলে রফতানি বাড়বে বলেই মনে করছে প্রশাসনিক মহল। রাজ্যের লক্ষ্য হল, আগামী ১০ বছরের মধ্যে রফতানি দ্বিগুণ করা। শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিকাঠামো কাউন্সিলের প্রধান সঞ্জয় বুধিয়া, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, একাধিক রফতানি সংস্থা ও বণিক সভার প্রতিনিধিরা।
নবান্ন সূত্রের খবর, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে এদিন। যে সব জায়গায় শিল্পের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, সেখানে রাস্তা ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে বলে আলোচনা হয়েছে। সড়কপথ, রেলপথ ও জলপথের মধ্যে যাতে সমন্বয় তৈরি হয়, তার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। এই সব ক্ষেত্রে জোর দিলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলেও মনে করছে রাজ্য।
উল্লেখ্য, নতুন শিল্প ও অর্থনৈতিক করিডর নীতি আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই নীতি অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে, দক্ষিণবঙ্গে তৈরি হচ্ছে তিনটি করিডর-রঘুনাথপুর-ডানকুনি-তাজপুর (৩৯৮ কিমি), ডানকুনি – কল্যাণী করিডোর (৪৩ কিমি) এবং ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম করিডর (১৬০ কিমি)। এছাড়া পশ্চিম বর্ধমান থেকে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার পর্যন্ত ৬৩৯ কিলোমিটার জুড়ে একটি অর্থনৈতিক ও শিল্প করিডরের কাজও করবে সরকার। এই করিডরগুলি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া জেলার মধ্য দিয়ে যাবে।
এদিনের বৈঠকে বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও লজিস্টিকসের জন্য নতুন নীতি, উদ্যোগ এবং রোড ম্যাপ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।