কলকাতা: পবিত্র রমজান মাস শেষে পালিত হচ্ছে ইদ। খুশির হাওয়া রাজ্যজুড়ে। এদিকে বছরে দু’বার পালিত হয় এই ইদ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠতে দেখা যায় সকলকেই। কিন্তু, কোন ইদ কখন হয়? তা নিয়ে প্রায়শই ধোঁয়াশা দেখা দেয়। মুসলিম সম্প্রদায়ের দুটি সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসবের মধ্য়ে একটি হল ইদ-উল-ফিতর। অন্যটি হল ইদ-আল-আদাহ (Eid al-Adha)।
‘ইদ উল-ফিতর’ কী?
আরবি ভাষায় রমজান কথাটি এসেছে রামিদা থেকে। যার আক্ষরিক অর্থ প্রচণ্ড গরম। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী হজরত মহম্মদ যখন কুরান সৃ্ষ্টি করেন তখন থেকেই রমজান মাস পালন হয়। চাঁদ দেখা দেওয়ার পর শেষ হয় রমজান মাস, পালিত হয় ইদ। ‘ইদ উল-ফিতর’ (Eid-ul-Fitr) একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ উৎসব, আনন্দ, খুশি। ‘ইদ’ এসেছে ‘আউদ’ শব্দ থেকে। এ এমন এক উৎসব যা ফিরে ফিরে আসে, পুনরায় অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে ‘ফিতর’ শব্দের অর্থ ভেঙে দেওয়া। দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখার পর যে উৎসব উদযাপন করা হয়, তা-ই ইদ-উল-ফিতর। এই রমজান মাসে (Ramadan month) সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত উপবাস রাখা ছাড়াও এই সময় যৌন সঙ্গম থেকেও বিরত থাকেন মুসলিমরা। সহজ কথায় এই মাসকে তাঁরা রাগ, ঈর্ষা, দ্বেষ ত্যাগের মাস বলে মনে করেন।
ইতিহাস বলছে, এই উৎসবের সূচনা করেছিলেন ইসলামের নবী হজরত মহম্মদ স্বয়ং। কোরান মোতাবেক, পুণ্যার্থীদের অবশ্যই ইদের নমাজের আগে জাকাত উল-ফিতর দিতে হয়। নতুন চাঁদ দেখা মাত্র পাড়া-মহল্লার মসজিদের মাইকে ঘোষিত হয় খুশির বার্তা ‘ইদ মোবারক’।
বকরি ইদ কী?
অন্যদিকে ইদ-আল-আদাহ কোরবানি ইদ বা বকরি ইদ নামেও পরিচিত। বকরি ইদে আল্লাহর উদ্দেশে কিছু না কিছু উৎসর্গ করে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের। কোরবানির জন্য বকরি বা ছাগল ব্যবহারের কারণেই এই ইদের আরেক নাম হয় বকরি ইদ বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি আরবিতে ‘বকরা ‘ শব্দের অর্থ গাভি বা গরু। সে কারণে গরুকে বলি দেওয়ার মধ্যে দিয়েও পালন করা হয় বকরি ইদ। হিজরি ক্যালেন্ডারের ১২তম ও শেষ মাস ধুল হিজার দশমতম দিনে পালি হয় বকরি ইদ। আরও সহজ করে বললে রমজান মাস শেষ হাওয়ার মোটামুটি ৭০ দিন পরে বকরি ইদ পালন করা হয়। এই ইদও শুরু হয় নতুন চাঁদ দর্শন করে। প্রসঙ্গত, মুসলিম ধর্মের সমস্ত উত্সবই লুনার বা চান্দ্র ক্যালেন্ডারের ওপরে নির্ভরশীল। সৌর ক্যালেন্ডারের থেকে চান্দ্র ক্যালেন্ডার আদপে ১১ দিন ছোট হয়। তাই প্রতি বছর ঈদের দিনও আলাদা আলাদা হয়ে যায়।