কলকাতা: তৃণমূলের অন্যতম বিধায়ক গতকাল বলেছিলেন, চন্দ্রযানের কোনও প্রয়োজন ছিল না। ওই টাকায় নাকি অনেক কিছু করা যেত! ইদ্রিশ আলির সেই বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক হওয়ার আগেই তৃণমূলের বড় অংশই জোর গলায় ইসরো (ISRO)-র প্রশংসা করেছে। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো ‘চন্দ্রযান’ অবতরণের ঠিক আগেই আগাম অভিনন্দন জানান ইসরোর বিজ্ঞানীদের। স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “কোনও ভেদাভেদ না করেই এই সাফল্য নিজেদের মতো করে উদযাপন করা হবে।” তাঁর বার্তা ছিল, “দেশের জন্য কোনও কাজের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় এক।” তবে বিজ্ঞানীদের কৃতিত্ব যতই থাকুক, রাজনীতির গন্ধ কিন্তু এই ক্ষেত্রেও পাওয়া যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বিজেপি যাতে কোনওভাবেই এই সাফল্যের সুযোগ নিতে না পারে, তার জন্যই উঠেপড়ে লেগেছে ঘাসফুল শিবির। রাজ্য বিধানসভা থেকে ইসরো-কে লিখিতভাবে অভিনন্দন বার্তা পাঠানো হবে বলেই জানা গিয়েছে।
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। তার আগে চন্দ্রযান ৩-এর এই সাফল্য যে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপিকে প্রচারে বেশ খানিকটা এগিয়ে রাখবে, তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। মনে করা হয়, এর আগে সেনাবাহিনীর সাফল্যও বিজেপিকে ভোট অঙ্কে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল। তাই প্রশ্ন উঠছে ইসরো-কে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়ে কি আগামীর রাজনীতির অঙ্কই কষছে তৃণমূল?
চন্দ্রযানের সাফল্যকে বিজেপি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারে, এই অঙ্ক বুঝেই কি জয়গাথায় সুর মেলাচ্ছে জোড়া ফুল? বাঙালি মেধার সাফল্যের কথা তুলে ধরে মোদীর পালের হওয়া কাড়তে চাইছে তারা?
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য তৃণমূলের এই অভিনন্দনে কোনও রাজনীতি দেখছেন না। তিনি বলেন, “এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। প্রথম কৃতিত্ব তো অবশ্যই ইসরোর। আর ২০১৯-এর ব্যর্থতার পর ইসরোকে নতুন করে উৎসাহ ও সমর্থন জোগানোর কৃতিত্ব ভারত সরকারের। আর সেই ভারত সরকার তো সবার।” তিনি উল্লেখ করেছেন, চন্দ্রযান ৩-এর জন্য যে ৬১৫ কোটি টাকা লেগেছে, সেটা সরকারকে দিতে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় চন্দ্রযান নিয়ে ধন্যবাদ সূচক প্রস্তাব আনেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায । এই প্রস্তাবে আলোচনায় অংশ নেন মনোজ টিজ্ঞা এবং মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আলোচনায় চন্দ্রযানের সঙ্গে যুক্ত থাকা বাঙালি বিজ্ঞানীদের নামের তালিকা উল্লেখ করেন চন্দ্রিমা।