পৃথিবীর স্বর্গ রয়েছে কাশ্মীরে। উপত্যকার প্রতিটা কোণা ছবির মতো করে সাজানো। জম্মু ও কাশ্মীর বেড়াতে গেলে বেশিরভাগ পর্যটক ঘুরে দেখে বেতাব ভ্যালি, পহেলগাঁও, গুলমার্গ, সোনমার্গের মতো বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। এই প্রতিটা জায়গা তার নিজের মতো করে সুন্দর। এ বছর পুজোতেও অনেকেই প্ল্যান বানিয়েছেন কাশ্মীর ভ্রমণ। বাকেট লিস্টে রয়েছে এই সব জায়গাই। তার সঙ্গে যোগ করে নিতে পারেন আরও একটি ভ্যালি। গুরেজ উপত্যকা। পর্যটকদের মধ্যে খুব বেশি জনপ্রিয় নয় গুরেজ ভ্যালি। কিন্তু এটি একটি মন ভোলানো ডেস্টিনেশন।
সবুজ ঘাসের গালিচা বিছানো রয়েছে গোটা উপত্যকা জুড়ে। ভ্যালির মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে কিষেণগঙ্গা নদী। উপত্যকায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় হাব্বাখাতুন পাহাড়। ত্রিকোণাকৃতি হাব্বাখাতুন দেখতেই পর্যটকেরা ভিড় করেন গুরেজ উপত্যকায়। সবুজ উপত্যকার বুক চিঁড়ে বয়ে গিয়েছে নীলাভ নদী। তার উপরে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের শৃঙ্গ। ৮,৪৬০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত গুরেজ যেতে গেলে আপনাকে অতিক্রম করতে হবে ১১,৬৭২ ফুট উচ্চতার রাজদান পাস। বছরের ৫-৬ মাস বরফ জমে থাকে গুরেজ উপত্যকায়। তখন গুরেজ যাওয়ার কোনও রাস্তা থাকে না।
শ্রীনগর থেকে দাওয়ার হয়ে পৌঁছাতে হয় গুরেজ। দাওয়ার গেলে অবশ্যই ঘুরে নেবেন চোরওয়ান ও তুলেইল উপত্যকা। পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে আগত বুরজিল নদীর সেতু পেরোতে হয় এখানে। ভারতীয়দের এই চোরওয়ান গ্রাম পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। দাওয়ার থেকে চোরওয়ানের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। এছাড়া দাওয়ার থেকে অন্য আর এক পথে যেতে পারেন শীতলবাগ সঙ্গম। এখানে বুরজিল নদী মিশেছে কিষেণগঙ্গায়। এই সঙ্গমের পাশেই গড়ে উঠেছে তুলেইল উপত্যকা। এখানে রয়েছে বারনাই গ্রাম। দাওয়ার থেকে ১৫ কিলোমিটারের পথ তুলেইল উপত্যকা।
শ্রীনগর থেকে গুরেজ প্রায় ১২৩ কিলোমিটারের পথ। বান্দিপুর হয়ে গুরেজ ৮৬ কিলোমিটারের রাস্তা। কিন্তু দাওয়ার সহ গুরেজ ঘুরে দেখতে গেলে হাতে অন্তত ৩ দিন রাখা দরকার। শ্রীনগর থেকেই গুরেজ যাওয়ার গাড়ি পেয়ে যাবেন। এছাড়া বান্দিপুর থেকেও গুরেজ যাওয়ার গাড়ি পাওয়া যায়। তবে, গুরেজ ঘুরে দেখার জন্য অনুমতি প্রয়োজন। সীমান্তের একেবারে পাশেই অবস্থিত হওয়ায় গুরেজ যাওয়ার জন্য অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। আগে বান্দিপুর ডি সি অফিস থেকে অনুমিত নিতে হত। এখন ফৌজি পোস্টে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড দেখালেই মিলবে গুরেজ যাওয়ার অনুমতি।