শ্রাবণ মলমাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন হল হরিয়ালি তিজ। হিন্দুদের কাছে অন্যতম ব্রত-উত্সব এটি। বাঙালিদের কাছে এই ব্রত-উপবাস জনপ্রিয় না হলেও অবাঙালিদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। চলতি বছরে হরিয়ালি তিজ পালিত হচ্ছে ১৯ অগস্ট। সাধারণ বিবাহিতা ও অবিবাহিতারা শ্রাবণ শুক্ল তৃতীয়া তিথিতে হরিয়ালি তিজের উপবাস ও ব্রত মেনে চলেন। এদিন মহিলারা তিজ মাতা অর্থাত্ দেবী পার্বতীর সঙ্গে শিব ও গণেশের পুজো করে থাকেন। হিন্দুধর্ম মতে, এই ব্রত উপবাসে রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম, যা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। উপবাসের সঠিক নিয়ম মেনে না চললে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায় বলে মনে করা হয়। এদিন কী কী কাজ করা একেবারেই উচিত নয়, তিজের উপবাস রাখার নিয়ম কী কী হতে পারে, তা জেনে নিন এখানে…
হরিয়ালি তিজের উপবাস রাখার সঠিক নিয়ম
– সৌভাগ্য ফেরাতে হরিয়ালি তীজের উপবাস পালন করা হয়। এ কারণে উপবাসের দিনে মহিলাা ষোলো সাজসজ্জা পরিধান করেন। এই ষোলোটি সজ্জা হল সৌভাগ্যের প্রতীক। এদিনে সবুজ শাড়ি বা চুরিদার পরেন মহিলারা। সবুজ রঙকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এ কারণে সবুজ টিপ, চুড়ি, সবুজ শাড়ি ও আরও অন্যান্য সাজসজ্জার উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
– হরিয়ালি তিজ উপবাস রাখা হয় টানা ২৪ ঘণ্টা। যদি ১৯ অগস্ট সূর্যোদয়ের সময় থেকে উপবাস করেন, তাহলে২০ অগস্ট সূর্যোদয়ের পর উপবাস পালন করতে হবে।
– দেবী পার্বতীর পুজো করা হয়, সঙ্গে উপবাসও রাখা হয়। শাস্ত্র অনুসারে, পার্বতীর ভাগ্যে অবারিত সৌভাগ্য নেই, তার কারণ স্বামী স্বয়ং মহাকাল শিব। এই কারণে পার্বতীর পুজো করার সময়, মহিলাদের বিভিন্ন সাজসজ্জার দ্রব্য নিবেদন করা হয়।
– হরিয়ালি তিজের দিনে স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলন এড়িয়ে চলা উচিত। ব্রহ্মচর্যের নিয়ম মেনে উপবাস সম্পন্ন করা আগে দরকার। তাহলেই উপবাস রাখা সম্পন্ন হতে পারে।
– পুজোর জন্য দেবী পার্বতী, ভগবান শিব ও গণেশের মূর্তি বা ছবি রাখুন। ইচ্ছে করলে খাঁটি মাটির মূর্তি বানিয়ে পুজো করতে পারেন। প্রথমে গণেশের আরাধনা করা হয়, তারপর দেবী পার্বতী ও ভগবান শিবের পুজো করা হয়। এদিনে হরিয়ালি তীজের উপবাসের কাহিনি ও ব্রতপাঠ করা উচিত।
এদিন কোন কোন ভুল কাজ করবেন না…
১. হরিয়ালি তীজের দিনে মনে রাখবেন এই উপবাস স্বামীর দীর্ঘায়ু কামনায় রাখা হয়। এ কারণে স্বামীর সঙ্গে কোনও বিষয়ে ঝগড়া বা কথা কাটাকাটি করবেন না। স্বামী সেবায় নিজেকে যুক্ত করা চেষ্টা করুন। অন্যদিকে স্বামীরাও যেন স্ত্রীদের প্রতি যত্ন নেন, খেয়াল রাখেন, তা মাথায় রাখা উচিত।
২. পুজোর পরে, শাশুড়ি-সহ বাড়ির মহিলাদের হরিয়ালি তিজের প্রসাদ ও মেকআপ সামগ্রী দিতে ভুলবেন না যেন। তাতে শাশুড়ি খুশি হয়ে আশীর্বাদ দেন।
৩. উপবাসের দিন রসুন, পেঁয়াজ, মাংস, মদ ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে দম্পত্তিদের। আমিষ জাতীয় খাবার বাড়ি থেকে দূরে রাখা ভালো। উপবাস রাখলে ঘুমাবেন না একেবারেই।
৪. যদি কেউ এদিনে ভিক্ষারি বা দুঃস্থরা আসেন, তাহলে তাদের কখনও ফেরাবেন না আপনি। সামর্থ্য অনুযায়ী তাকে অর্থ, খাদ্য, বস্ত্র ইত্যাদি দান করতে পারেন।