প্রত্যেক মানুষেরই ধন-সম্পদ ও সৌভাগ্য বৃদ্ধির আশা থাকে। এই কারণেই দেবী লক্ষ্মী ও ভগবান গণেশের পুজো করেন ভক্তরা। ধর্মীয় বিশ্বাস যে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদপ্রাপ্ত ব্যক্তির জীবনে সম্পদ, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের অভাব হয় না। হিন্দু ধর্মে যাঁরা বিশ্বাস করেন, তাঁরা দেবী লক্ষ্মীকে সম্পদের দেবী হিসেবে উপাসনা করেন। হিন্দুধর্মে, সমস্ত দেব-দেবীর বাহন সাধারণত ভিন্ন প্রাণী হয়ে থাকে। একইভাবে লক্ষ্মী তার বাহন হিসেবে পেঁচাকেই বেছে নিয়েছিলেন। দেবী লক্ষ্মী পেঁচাকে তার বাহন হিসেবে বেছে নেওয়ার পেছনে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি।
কীভাবে পেঁচা লক্ষ্মীর বাহন হল?
প্রকৃতি ও পশু-পাখি সৃষ্টির পর সকল দেব-দেবীই তাদের বাহন বেছে নিচ্ছিলেন। একইভাবে লক্ষ্মী তার বাহন বেছে নিতে মর্ত্যে ভ্রমণ করেন।তখনই সমস্ত পশু-পাখি লক্ষ্মীর সামনে হাজির হয়ে নিজেদের বাহন বেছে নেওয়ার আহ্বান জানান। তখন লক্ষ্মী সমস্ত পশু-পাখিদের জানান, ‘আমি কার্তিক মাসের অমাবস্যার দিনে মর্ত্যে ভ্রমণ করব, সেই সময় যে পশু বা পাখি প্রথমে পৌঁছবে, তখন আমি তাকে আমার বাহন হিসেবে গ্রহণ করব।’
অমাবস্যার রাত সাধারণত খুব অন্ধকার হয়ে থাকে। দিনের বেলায় পাখিদের কলরবে মুখর হয়ে থাকে। কিন্তু রাতে সব পশু-পাখিদের দেখা যায় কম। কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে যখন ধনলক্ষ্মী মর্ত্যে নেমে আসেন, তখন পেঁচা প্রথম লক্ষ্মীকে দেখে কাছে পৌঁছে যায়। কারণ পেঁচা নিশাচর প্রাণী। পেঁচার এই গুণাবলীতে খুশি হয়ে দেবী লক্ষ্মী তাকে নিয়ে তার যাত্রা শুরু করেন। সেই থেকে লক্ষ্মীকে পেঁচা বাহনীও বলা হয়।
পৌরাণিক তাৎপর্য
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, পেঁচা সবচেয়ে বুদ্ধিমান নিশাচর প্রাণী। শাস্ত্র ও তন্ত্রশাস্ত্র অনুসারে, পেঁচা অতীত ও ভবিষ্যতের জ্ঞান ও লক্ষণ বুঝতে পারে। পেঁচার উপর লক্ষ্মীর মূর্তিকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে শুভ ও সম্পদের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। দীপাবলির রাতে পেঁচা দেখাকে লক্ষ্মীর আগমন বলে মনে করা হয়।