পরিশ্রম করলে সাফল্য মিলবেই। এর জন্য প্রয়োজন সুযোগও। মন্দিরা সেই সুযোগ পেয়েছেন, কাজেও লাগিয়েছেন। পরিশ্রম, প্রচেষ্টা থামেনি। রাজ্য ও জাতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এ বার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্তরে সেই সাফল্য। তাইকোন্ডোতে রাজ্য ও জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মন্দিরা মণ্ডল। এ বার সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ানশিপে নির্বাচিত হয়েছেন পান্ডুয়ার মন্দিরা। নিজের পরিশ্রমের পুরস্কার এবং বাবার স্বপ্ন পূরণ করাই প্রাথমিক লক্ষ্য মন্দিরার। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
মন্দিরার বাবা মানিক মণ্ডলের ইচ্ছে ছিল খেলাধুলা করে সেনা বাহিনীতে যোগ দেবেন। কিন্তু আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় খেলাধুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। একটা সময় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। স্বপ্ন চাপা পড়ে গিয়েছে ইট-বালি-পাথরে। খেলাধুলো যেমন হয়নি, তেমনই সেনায় যোগ দেওয়ার স্বপ্নও অধরা থেকেছে। ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন সংসারের হাল ধরতে। হায়দরাবাদে রাজমিস্ত্রির সেন্টারিং এর কাজ করেন মানিক। নিজের স্বপ্ন পূরণ না হলেও মেয়েকে সেই সুযোগ করে দিয়েছেন মানিক মণ্ডল।
মন্দিরা এ বছর তিন্না ইলামপুর স্মৃতি বিদ্যামন্দির থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন। ২০১৭ সালে স্থানীয় এক তাইকোন্ডো শিক্ষক সুকান্ত মিস্ত্রির কাছে মেয়েকে ভর্তি করান মানিক মণ্ডল। পান্ডুয়ার তেলিপাড়ায় একটি প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে তৃতীয় হন মন্দিরা। সাফল্যের স্বাদ পাওয়ার সেই শুরু। এরপর একে একে রাজ্য ও জাতীয় স্তরে সোনা জয়। কলকাতা, দিল্লী, লখনউতে তাইকোন্ডো প্রতিযোগিতায় প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে সম্প্রতি সাউথ এশিয়ান চ্যাম্পিয়ানশিপে তাঁর নাম নির্বাচিত হয়েছে।
ভবিষ্যতে বাবার স্বপ্ন সত্যি করা যেমন তাঁর ইচ্ছা, পাশাপাশি এশিয়ান গেমস ও অলিম্পিক্সের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মঞ্চ থেকে দেশের হয়ে পদক জিততে চান মন্দিরা। কন্যাশ্রী দিবসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকেও মানপত্র সহ পুরস্কার পেয়েছেন মন্দিরা। আর তাতে মন্দিরা ও তাঁর পরিবার এবং প্রতিবেশীদের উচ্ছ্বাসের মাত্রা বেড়েছে। মেয়ের সাফল্যে সবচেয়ে বেশি খুশি মা মিলন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ওর বাবা চায় মেয়ে আরও ভালো খেলুক।’ বাংলার ক্রীড়ামহলের প্রত্যাশাও যেন সেটাই।