Fake Review: অনলাইনে কেনাকাটি করতে গিয়ে, কী কিনব আর কী কিনব না, তা নিয়ে বিভ্রান্ত হতে হয় আমাদের। এক প্রোডাক্ট থেকে অন্য প্রোডাক্টে চটজলদি স্ক্রল করা থেকে আমাদের বিরত রাখার যদি একমাত্র পন্থা কিছু থাকে, তাহলে তা হল একটা ভাল প্রোডাক্ট রিভিউ। Amazon বা Flipkart থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে এই বিষয়গুলি খুব ভাল করেই অনুধাবন করতে পারি আমরা। কিন্তু আজকাল অনেক রিভিউতে জলও মেশানো থাকে! তার কারণ পেইড রিভিউর ভিড়ে সত্যিকারের একটা ঠিকঠাক রিভিউ খুব সহজেই আমাদের নজর এড়িয়ে যায় আমাদের। তবে হালফিলের সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভুয়ো রিভিউ। কিন্তু এত ধরনের রিভিউ বাজারে রয়েছে যখন, তখন মানুষের বিভ্রান্ত হওয়াটাও খুব স্বাভাবিক। তাই, ভুয়ো রিভিউ কীভাবে বুঝবেন, সর্বাগ্রে সেটাই আপনার জেনে রাখা উচিত।
রিভিউর দিনক্ষণ ভাল করে যাচাই করে নিন
যদি দেখেন, একদিনে একগুচ্ছ রিভিউ আপনার সামনে কোনও ভাবে হাজির হয়েছে, তাহলে বুঝে যাবেন সেগুলি ভুয়ো রিভিউ। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলিতে বেশ কিছু বিক্রেতারা কর্মী নিয়োগ করে, যারা তাদের প্রোডাক্টের জন্য রিভিউ লিখে দেয়। আর সেই রিভিউ বিভিন্ন ব্যাচে পোস্ট করে বিক্রেতারা। বিভিন্ন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে রিভিউর দিকে নজর রাখুন। বিশেষ করে তাতে যদি কিছু অনিয়ম নজরে আসে, তাহলে বুঝবেন নিশ্চয়ই গণ্ডগোল আছে।
একই প্রোডাক্টের বিভিন্ন সময়ের রিভিউ
এই কাজটা যদি করতে পারেন, তাহলে সবথেকে আপ টু ডেট ফিডব্যাক পাবেন সত্যিকারের ক্রেতাদের কাছ থেকে। একটা প্রোডাক্টের বিভিন্ন সময়ের রিভিউগুলি পাশাপাশি রেখে যদি তুলনামূলক আলোচনা করেন, তাহলে একটা ধারণা পেতে পারেন। যদি দেখেন আগের এবং এখনকার রিভিউ প্রায় একই রয়েছে, প্রোডাক্টের কোয়ালিটি বা পারফরম্যান্সে সেরকম কোনও পরিবর্তন নেই, তাহলে আপনি সেই রিভিউ বিশ্বাস করতে পারেন।
সত্যিকারের রিভিউতে মূলত কী থাকে
সত্যিই যাঁরা রিভিউ লেখেন, তাঁরা প্রোডাক্টটি ব্যবহার করে দেখেন। কীভাবে তাঁরা সেই প্রোডাক্ট ব্যবহার করেছেন, তাতে ভাল কী রয়েছে, খারাপই বা কী আছে, সেই ডিভাইস নিয়ে তাঁদের প্রত্যাশা- এই সব দিক প্রতিবেদনে তুলে ধরেন রিভিউয়াররা। সত্যি যাঁরা রিভিউ লিখতে অভ্যস্ত, তাঁরা সাধারণত ‘দারুণ প্রোডাক্ট’, ‘দুর্ধর্ষ পারফরম্যান্স’, ‘খুব ভাল লেগেছে’ এই সব শব্দবন্ধগুলি ব্যবহার করেন না। রিভিউতে এই সব শব্দ দেখতে পেলেই বুঝবেন, তা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বিভিন্ন রিভিউতে একই শব্দ-বাক্যাংশ
একই ধাঁচ বা ছকে লেখা রিভিউ আপনি খুব সহজেই ধরতে পারবেন। একটাই টেমপ্লেট বা স্ক্রিপ্ট থেকে কপি করে একাধিক রিভিউ লেখা হয়। আর তাতে কিছু শব্দ বা কিছু বাক্যাংশ অনেক সময় কমন থেকে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ‘ওয়াও! এই প্রোডাক্টটা আমার জীবন বদলে দিল।’ বারংবার যদি এই শব্দ, একই বাক্য একাধিক রিভিউতে দেখতে পান, তাহলে তা এক্কেবারে বিশ্বাস করবেন না।
রিভিউর জন্য অন্য আরও সোর্স ঘাঁটুন
ইউটিউব বা বিভিন্ন নামজাদা ওয়েবসাইট থেকেই রিভিউ পড়ুন। যেখানে একটা প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া থাকে। অনেক জনপ্রিয় ইউটিউবারই তাদের পেজে প্রোডাক্ট রিভিউ শেয়ার করেন, সেগুলি দেখতে পারেন। যে কোনও একটা জায়গা থেকে রিভিউ পড়ে বা দেখে সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন না।
রিভিউয়ারের প্রোফাইলটাও চেক করুন
রিভিউটি কে লিখছেন, তিনি এর আগে কী-কী রিভিউ লিখেছেন এবং তার থেকেও বড় কথা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রোডাক্টে কীরকম রিভিউ তাঁরা দিয়েছেন, এই সব কিছুই খতিয়ে দেখে নিন। যদি দেখেন রিভিউয়ার প্রোডাক্টে পাঁচটা স্টারের থেকে কম দেন না, তাহলে তা কখনই বিশ্বাস করা উচিত নয়।
অ্যামাজ়নে ভেরিফায়েড পারচেজ় ব্যাজ
এর অর্থ হল, ওই রিভিউয়ার প্রোডাক্টটি অ্যামাজ়ন থেকেই কিনেছেন। একমাত্র যাঁদের কাছে ব্যাজ রয়েছে, আপনি তাঁদেরই রিভিউ চাইলে দেখতে পারেন। এতে অন্তত এটুকু পরিষ্কার হয়ে যায় যে, রিভিউয়ারকে প্রোডাক্টটি ইনসেন্টিভ হিসেবে বা কিছুর পরিবর্তে শুধু পজ়িটিভ রিভিউ তৈরির জন্য দেওয়া হয়নি।
প্রোডাক্টের রিভিউ বিশ্লেষণ করতে বিভিন্ন টুলের সাহায্য নিন
আপনি রিভিউ বিশ্লেষণ করে নিতে পারেন বিভিন্ন টুলের মাধ্যম। এর ফলে প্রোডাক্টের গুণমান এবং নির্ভরযোগ্যতা মূল্যায়নের কাজটি সহজ হয়ে যেতে পারে। Fakespot, TheReviewIndex এবং ReviewMeta-র মতো একাধিক জায়গায় প্রোডাক্ট ইউআরএল পেস্ট করে জেনে নিতে পারবেন রিভিউটি কতটা বিশ্বাসযোগ্য।