Chandrayaan-3: সফল হবেই চন্দ্রযান-3 মিশন! ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে নকশা

TV9 Bangla Digital | Edited By: Sayantan Mukherjee

Aug 22, 2023 | 6:55 PM

চন্দ্রযান-3-এর অবতরণের প্রক্রিয়াটিও সহজ করা হয়েছে। ল্যান্ডিং স্পট খোঁজার জন্য চন্দ্রযান-3 আগে থেকে কোনও হিসেবনিকেশ করবে না। একান্তই যদি ল্যান্ডিং স্পটে 30 সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় বস্তুর সম্মুখীন হয়, তাহলে তা এড়ানোর জন্যই প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

Chandrayaan-3: সফল হবেই চন্দ্রযান-3 মিশন! ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে নকশা
যে সব কারণে চন্দ্রযান-3 মিশন সফল হতে চলেছে...

Follow Us

অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটা ঘণ্টার। তারপরই চাঁদের মাটিতে পাখির পালকের মতো অবতরণ করবে চন্দ্রযান-3-এর ল্যান্ডার বিক্রম। ISRO জানিয়েছে, বুধবার 23 অগস্ট সন্ধ্যা 6টা 4 মিনিটে চন্দ্রযানটি চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চন্দ্রযান মিশনের সাফল্যে কামনা করে শুভেচ্ছাবার্তা আসতে শুরু করেছে। শুধু ভারত নয়, গোটা বিশ্বই এখন তাকিয়ে রয়েছে ভারতের চন্দ্রযান-3 মিশনের দিকে। বিশেষ করে রাশিয়ার লুনা-25 মহাকাশযানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর গোটা বিশ্বের নজর এখন ভারতের চন্দ্রযানটির দিকেই।

চন্দ্রযান-3-এর পরিণতি যে তার পূর্বসূরি চন্দ্রযান-2-এর মতো হবে না, সেই বিশ্বাস আপামর ভারতবাসীর পাশাপাশি ইসরোর বিজ্ঞানীদেরও। তার অন্যতম কারণ হল, চন্দ্রযান-2 এর ‘সাফল্য ভিত্তিক নকশা’ (Success Based Design)-র বিপরীতে চন্দ্রযান-3 এর ‘ব্যর্থতা-ভিত্তিক নকশা’ (Failure Based Design)।

চন্দ্রযান-3-এর ‘ব্যর্থতা ভিত্তিক ডিজ়াইন’ কী?

খুব সহজ ভাবে বলতে গেলে, সম্ভাব্য ব্যর্থতার কথা মাথায় রেখেই ISRO এই ‘সাফল্য ভিত্তিক নকশা’ তৈরি করেছে। সফল এবং নিরাপদ অবতরণ নিশ্চিত করতে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মিশনকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেই বিষয়টাই তুলে ধরেছে এই নকশা। ইসরোর প্রদান এস সোমানাথ আগেই জানিয়েছিলেন, চন্দ্রযান-2-এর ল্যান্ডারের পাঁচটি ইঞ্জিন প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বার ধাক্কা খেয়েছিল এবং তার ফলে একাধিক ত্রুটিরও সৃষ্টি করেছিল। তারপরেই যানটি তার গতিপথ সংশোধন করতে গতি বাড়ায়। চন্দ্রযান-2-এর যেখানে অবতরণ করার কথা ছিল, সেই জায়গাটি খুবই ছোট, 500×500 বর্গমিটার এলাকা-জুড়ে বিস্তৃত। ফলত, সেখানে মহাকাশযানের ঘোরার ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ে এবং অবতরণ হয়ে ওঠে উচ্চ বেগের।

চন্দ্রযান-3-এর ক্ষেত্রে তেমনটা হচ্ছে না। কারণ তার অবতরণের এলাকাটি অপেক্ষাকৃত বড়, 4km x 2.5km জুড়ে বিস্তৃত। তার ফলে মহাকাশযানটি অবতরণ করার জন্য আরও বড় এলাকা পেয়ে যাচ্ছে। তাছাড়াও এই চন্দ্রযানে আরও বেশি পরিমাণ জ্বালানি দেওয়া হয়েছে, যাতে সমস্যার সৃষ্টি হলে তা বিকল্প কোনও স্থানে অবতরণ করতে পারে। এছাড়াও চন্দ্রযান-3-এ আরও সোলার প্যানেল রয়েছে, যার ফলে এটি যেভাবেই অবতরণ করুক না কেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করতে সে সক্ষম হবে। শুধু তাই-ই নয়। চন্দ্রযানের ভার্টিকল ভেলোসিটি কম্পোনেন্ট বা উল্লম্ব বেগের উপাদানটিও প্রতি সেকেন্ডে 2 মিটার থেকে বাড়িয়ে 3 মিটার করা হয়েছে।

সবথেকে বড় কথা হল, চন্দ্রযান-3-এর অবতরণের প্রক্রিয়াটিও সহজ করা হয়েছে। ল্যান্ডিং স্পট খোঁজার জন্য চন্দ্রযান-3 আগে থেকে কোনও হিসেবনিকেশ করবে না। একান্তই যদি ল্যান্ডিং স্পটে 30 সেন্টিমিটারের চেয়ে বড় বস্তুর সম্মুখীন হয়, তাহলে তা এড়ানোর জন্যই প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

আসলে চার বছর আগের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবারের মহাকাশযানটিকে সক্ষম করে তোলার জন্য প্রাণপাত করে খেটেছেন ইসরো-র বিজ্ঞানীরা। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স-এর এরোস্পেস সায়েন্টিস্ট অধ্যাপক রাধাকান্ত পাধি দাবি করেছেন, এবারের বিক্রম আগেরবারের তুলনায় অনেক বেশি পরিণত এবং প্রযুক্তিগতভাবেও অনেক উন্নত। এই প্রযুক্তিগত বিশেষত্বের অন্য়তম হল এবারের ‘ইনবিল্ট স্যালভেজ মোড’। কী এই ‘ইনবিল্ট স্যালভেজ মোড’? যদি চন্দ্রযান-3 বিপদের মুখে পড়ে, তাহলে পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করবে এই ‘ইনবিল্ট স্যালভেজ মোড’। অধ্যাপক রাধাকান্ত পাধি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দ্বিতীয় চন্দ্রযানে বিক্রম নিজের গতিতে রাশ টানতে পারেনি বলেই টাল খেয়ে পড়ে গিয়েছিল। যে ‘অ্যালগোরিদম ফেলিওর’ হয়েছিল, তা এবার ঠিক করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “সেই সঙ্গে চন্দ্রযান-3-এর ‘স্ট্রেস লেভেল’-ও পরীক্ষা করা হয়েছে। অর্থাৎ কোনও পরিস্থিতিতেই যাতে ভয়ে-উদ্বেগে কিংকর্তব্যবিমূঢ় না হয়ে পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে।” শুধু যানটির প্রযুক্তিগত উন্নতিসাধনই তাই-ই নয়, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যে অংশে অবতরণ করবে ল্যান্ডার বিক্রম, সেই অবতরণের পরিসর অর্থাৎ ল্যান্ডিং এরিয়া-ও বাড়ানো হয়েছে এবার।

Next Article