যখনই কোনও মিশন মহাকাশে পাঠানো হয়, তখন সেখানে ইনস্টল করা থাকে অনবোর্ড কম্পিউটার। আর সেই থেকে প্রাপ্ত তথ্যই মিশনের সঠিক অবস্থা বলে দেয়। একই ঘটনা ঘটছে চন্দ্রযান-3 এর ক্ষেত্রেও। অবতরণের ঠিক 15 মিনিটের মধ্যে, যানটি কোন অবস্থায় রয়েছে, তা জেনে যাবে ISRO-র বিজ্ঞানীরা। এই সময়টিকে বলা হয় ফিফটিন মিনিটস অব টেরর (Fifteen Minutes of Terror)। চন্দ্রযান-3-এর অবতরণ হবে 23 আগস্ট সন্ধ্যা 6.04 মিনিটে। অর্থাৎ হাতে আর বেশি সময় বাকি নেই। বিক্রম ল্যান্ডার 25 কিমি x 134 কিমি কক্ষপথে নিজের মতো এগচ্ছে। এই 25 কিলোমিটার উচ্চতা থেকে নামতে ষুরু করবে। চন্দ্রযান-2-এর উচ্চ গতি, সফ্টওয়্যার ত্রুটি এবং ইঞ্জিন ব্যর্থতার কারণে চাঁদের কাছে গিয়েও সাফল্য পায়নি। তাই এবার বিজ্ঞানীরা ফিফটিন মিনিটস অব টেররেই এর গতি অনেকটা কমিয়ে নেবে।
আগের বারের মতো আর কোনও ভুল করবে না ISRO। তাই চন্দ্রযান-3-এ অনেক ধরনের সেন্সর ও ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এলএইচডিএসি (LHDAC) ক্যামেরা বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ এই সেন্সর বিক্রম ল্যান্ডারকে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে সাহায্য করবে। এর সঙ্গে আরও কিছু পেলোড অবতরণের সময় সাহায্য করবে, সেগুলো হল- ল্যান্ডার পজিশন ডিটেকশন ক্যামেরা (LPDC), লেজার ডপলার ভেলোসিটিমিটার (LDV) এবং ল্যান্ডার হরাইজন্টাল ভেলোসিটি ক্যামেরা (LHVC)। এই সব ক’টি ক্যামেরা একসঙ্গে কাজ করবে। যাতে ল্যান্ডারটিকে নিরাপদ চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করা যায়।
এবার দু’টি বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে বিক্রম ল্যান্ডারে। প্রথমটি হল এটিতে একটি সেফটি মোড সিস্টেম রয়েছে, যা যে কোনও ধরনের দুর্ঘটনা থেকে যানটিকে রক্ষা করবে। আর বিক্রমে দু’টি অনবোর্ড কম্পিউটার বসানো হয়েছে, যা সব ধরনের বিপদের তথ্য ISRO-কে দেবে। আর তাদের সঙ্গে বিক্রমের ক্যামেরা ও সেন্সর কাজ করবে।
শেষ 15 মিনিটে কীভাবে কাজ করবে চন্দ্রযান-3?
25 কিলোমিটার উচ্চতা থেকে চাঁদে অবতরণের যাত্রা শুরু করবে বিক্রম ল্যান্ডার। পরবর্তী পর্যায়ে পৌঁছাতে প্রায় 11.5 মিনিট সময় লাগবে। অর্থাৎ 7.4 কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত যাবে।
এটির গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে 358 মিটার। যতক্ষণ না এটি 7.4 কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায়, ততক্ষণ এই গতিতেই এগিয়ে যাবে। তারপরে 6.8 কিলোমিটার উচ্চতায় এতে গতি আরও কমবে।
6.8 কিমি উচ্চতায়, গতি প্রতি সেকেন্ডে 336 মিটার কমে যাবে। পরবর্তী স্তর হবে 800 মিটার।
800 মিটার উচ্চতায়, ল্যান্ডারের সেন্সরগুলি চাঁদের পৃষ্ঠে লেজার রশ্মি রেখে অবতরণের সঠিক জায়গা খুঁজবে।
150 মিটার উচ্চতায় ল্যান্ডারের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে 60 মিটার হবে। অর্থাৎ 800 থেকে 150 মিটার উচ্চতার মধ্যে।
60 মিটার উচ্চতায় ল্যান্ডারের গতি প্রতি সেকেন্ডে 40 মিটার হবে। অর্থাৎ 150 থেকে 60 মিটার উচ্চতার মধ্যে।
10 মিটার উচ্চতায়, ল্যান্ডারের গতি হবে 10 মিটার প্রতি সেকেন্ডে।
চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের সময়, অর্থাৎ সফট ল্যান্ডিং-এর জন্য, ল্যান্ডারটির গতিবেগ হবে প্রতি সেকেন্ডে 1.68 মিটার।