Bankura News: ডিঙিতে স্কুলে যান শিক্ষিকা
বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের মানাচরের অবস্থান একেবারে দামোদরের গর্ভে। দামোদরের বুকে জেগে ওঠা এই চরে একসময় বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। সময়ের সাথে সাথে সেই সংখ্যা কমতে কমতে এখন কুড়ি পঁচিশটি পরিবারে ঠেকেছে। শিক্ষিকা যুক্তি যাই দিন না কেন স্কুলটির এই হালের জন্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করেছে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। আগামীদিনে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপেরও আস্বাস দিয়েছে সংসদ।
বাঁকুড়ার মেজিয়া ব্লকের মানাচরের অবস্থান একেবারে দামোদরের গর্ভে। দামোদরের বুকে জেগে ওঠা এই চরে একসময় বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। সময়ের সাথে সাথে সেই সংখ্যা কমতে কমতে এখন কুড়ি পঁচিশটি পরিবারে ঠেকেছে। স্বাভাবিক ভাবে মানাচর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কমেছে পড়ুয়ার সংখ্যা। কিন্তু পরিকাঠামোর কোনো বদল হয়নি। পাকা স্কুল ভবন আছে, আছে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, যথেষ্ট সংখ্যক ক্লাসরুম, মিড ডে মিলের ব্যবস্থা এমনকি তিন জন শিক্ষক শিক্ষিকাও। কিন্তু পড়ুয়ার সংখ্যা শুনলে বেশ কিছুটা অবাক হতে হয় বইকি। সবমিলিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা মাত্র ১৬ জন। মাঝেমধ্যে দু-চারজন পড়ুয়া স্কুলে আসে। বাকি দিনগুলো মোটামুটি ক্লাসরুম থাকে শূন্যই। কিন্তু এই স্কুলেই একসময় পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল পঞ্চাশের উপরে। কিন্তু কেন এমন হাল। অভিভাবকদের দাবী শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে আসার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না। ইচ্ছেমতো সময়ে স্কুলে আসেন আবার ইচ্ছেমতো স্কুল বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যান। প্রায় দিনই স্কুলে আসেন না প্রধান শিক্ষক। একজন শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ফলে স্কুলের পড়াশোনা লাটে ওঠার জোগাড়। অগত্যা অনেকেই এই স্কুল ছাড়িয়ে শিশুদের ভর্তি করেছেন নদীর পাড়ে থাকা অন্ডালের বেসরকারী স্কুলে। স্কুলের শিক্ষিকা স্কুলে নির্ধারিত সময়ে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে যোগাযোগের অভাবকেই দায়ী করছেন। তাঁর দাবী বাঁকুড়া জেলার দিক থেকেই হোক বা পশ্চিম বর্ধমান জেলার দিক থেকে, যেদিক দিক দিয়েই স্কুলে যাওয়া হোক না কেন স্থলপথে মানাচরের সাথে বহির্বিশ্বের কোনো যোগাযোগ নেই। দামোদরের ওই অংশে ফেরি সার্ভিসও নেই। অগত্যা স্কুলে যাতায়াতে নির্ভর করতে হয় মানাচরের মানুষদের ব্যাক্তিগত ডিঙির উপর। মানাচরের মানুষ উৎপাদিত সবজী অন্ডাল বাজারে বিক্রি করে গ্রামে ফিরলে তাঁদের ডিঙি চড়েই মানাচরে পৌঁছান শিক্ষক শিক্ষিকারা। ফেরার সময়ও গ্রামবাসীদের অনুরোধ করে তাদের ডিঙিতে চড়েই ফিরতে হয়। যোগাযোগের এই অভাবের কারনেই মাঝেমধ্যে স্কুলে নির্ধারিত সময়ে পৌঁছানো যায়না বলে দাবী শিক্ষিকার। শিক্ষিকা যুক্তি যাই দিন না কেন স্কুলটির এই হালের জন্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করেছে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। আগামীদিনে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপেরও আস্বাস দিয়েছে সংসদ।