BUDGET 2023: ‘কম ঝুঁকিতে বেশি রিটার্ন চাই’ , নির্মলাকে খোলা চিঠি এক সঞ্চয়কারীর
Union Budget 2023: ঝাড়গ্রামের মনোজ কুমার, মোটামুটি স্বচ্ছল। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁর ভয় লাগে। তাই, ভবিষ্যতের সঞ্চয়ের জন্য বেশ কিছু সুবিধা চেয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন তিনি।
ম্যাডাম অর্থমন্ত্রী,
আমি মনোজ কুমার, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। আমি এখন গুরগ্রামের একটি রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতকারী কারখানায় কাজ করি। এই বছরের বাজেটে আমার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আমি আপনাকে এই চিঠি পাঠাচ্ছি। অর্থমন্ত্রী, ভগবানের কৃপায় আমার সবকিছু ঠিকঠাকই চলছে। আমি আমার খরচ মেটাতে মোটামুটি সক্ষম। আমার উদ্বেগ শুধুমাত্র ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমি আমার সঞ্চয় কোথায় বিনিয়োগ করব জানি না। আমার টাকা কোথায় রাখব? আমার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন তাঁরা আমাকে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু কষ্টার্জিত টাকা শেয়ার বাজারে লাগাতে আমি সাহস পাচ্ছি না।
আমি শুনেছি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে অনেকে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। আমি শুনেছি মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগকারীদেরও গত বছর ভাল কাটেনি। রিটার্ন এসেছে মাত্র ৪ শতাংশ। আমরা পিপিএফ-এ বিনিয়োগ করি এবং ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটে টাকা রাখি। বিমাতেও বিশেষ কোনও রিটার্ন নেই। কিন্তু আমি এলআইসিকে বিশ্বাস করি। সে কারণেই আমি এলআইসিতেই অনেক টাকা বিনিয়োগ করেছি। রিটার্ন কম হলেও আমি ঝুঁকি নিই না। আজকাল, আমি এফডিতেও ভাল রিটার্ন পাচ্ছি। অনেকদিন পর ভাল সময় এসেছে। অন্যথায়, এফডি-তে ট্যাক্স কেটে নেওয়ার পরে আমাদের হাতে কিছুই থাকত না।
অর্থমন্ত্রী, অনুগ্রহ করে বাজেটে এমন কিছু ঘোষণা করুন যার ফলে যাঁরা ঝুঁকি নেন না তাঁরাও যথাযথ আয় পান। মুদ্রাস্ফীতি ছাপিয়ে রিটার্ন দেবে এমন একটি বন্ড বাজারে আনুন। সম্ভব হলে এমন একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্পও শুরু করুন। তাতে অন্তত আমরা আমাদের সঞ্চয় দিয়ে মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারব।
সর্বোপরি, আমাদের সঞ্চয় জাতিগঠনের কাজেও ব্যবহৃত হয়। সুতরাং, আমাদের মতো সঞ্চয়কারীদের ভাল আয় উপার্জনের অধিকার থাকা উচিত। ফিক্সড ডিপোজ়িটে প্রাপ্ত সুদের উপর কর ছাড় দেওয়া উচিত। ৫ বছরের করমুক্ত ফিক্সড ডিপোজ়িটের রিটার্নের উপরও কর দিতে হয়।
আমি দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি জাতীয় পেনশন স্কিম থেকে গ্যারান্টিযুক্ত রিটার্ন পাওয়ার কথা। সম্ভব হলে আপনার বাজেট বক্তৃতায় এরকম কিছু ঘোষণা করুন। তাতে অন্তত বৃদ্ধ বয়সে আমাদের সাহায্য করবে এমন প্রকল্পে আমরা যেন টাকা রাখতে পারি।
ম্যাডাম আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সঞ্চয়ের জন্য উৎসাহের প্রয়োজন। ২০১৪ থেকে ৮ বছর হয়ে গিয়েছে, আয়কর আইনের ৮০সি ধারার উর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়নি। দেড় লক্ষ টাকার সীমা শুধুমাত্র আমার দুই সন্তানের পড়াশোনার ফি, বেতন, বিমা প্রিমিয়াম এবং বেতন থেকে যে পিএফ কাটা হয় তা দিয়েই শেষ হয়ে যায়। অবশিষ্ট সঞ্চয়ের উপর আমরা কোনও সুবিধা পাই না। সম্ভব হলে দয়া করে এই সীমাও বাড়ান। অর্থমন্ত্রী আমরা এর বেশি কিছু চাইছি না। দয়া করে আমাদের জন্য কিছু একটা করুন। কারণ এটা আমাদের অধিকার!
ধন্যবাদ-সহ
মনোজ কুমার