আলিপুরদুয়ার: প্রবল বৃষ্টিতে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি। ভুটান পাহাড় থেকে লাগাতার মাটি ধোয়া জলের স্রোত জয়গাঁ হয়ে ঢুকছে বিস্তীর্ণ ডুয়ার্স এলাকায়। ভাসাচ্ছে চা-বলয়। বুধবারের পর বৃহস্পতিবারও অতি ভারী বৃষ্টির কারণে আলিপুরদুয়ারে তোর্ষা ও কালজানি নদী বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এই জল ভাসিয়েছে মেচপাড়া গ্রাম ও হাইওয়ের মাঝে একমাত্র সংযোগকারী সেতু। উদ্ধারকাজে নেমেছে ত্রিশক্তি কোরের কৃপাণ ডিভিশনের ট্রুপ। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেনা জওয়ানরা নদী পার করে গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে। প্রবল বর্ষণের মধ্যেই চলছে সেনার উদ্ধারকাজ। এখনও অবধি ৭২ জন গ্রামবাসীকে নিরাপদ জায়গায় উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। এরমধ্যে ২৪ জন শিশুও রয়েছে।
হলং নদীরও জল বেড়েছে। এদিন তা জলদাপাড়া টুরিস্ট লজে গিয়ে ঢুকে পড়ে। যার জেরে জলদাপাড়া সরকারি টুরিস্ট লজ জলমগ্ন। বৃষ্টি থামলে তবে পরিস্থিতি বদলের সম্ভাবনা। তবে যা অবস্থা, তাতে বৃষ্টি থামার লক্ষণ নেই বললেই চলে। তাও এসময় জঙ্গল বন্ধ থাকায় পর্যটক নেই। তবে স্থানীয়রা ত্রস্ত। হলংয়ের জলে ভাসতে পারে বন্যপ্রাণী।
বৃহস্পতিবার জলে নেমে উদ্ধারকাজে হাত লাগাতে দেখা গিয়েছে কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মনকে। হাঁটুর উপর জলে নেমে তিনি সেনাবাহিনীর সঙ্গে উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছেন। এই বিডিওকে কোভিডের সময় পিপিই কিট পরে সোয়াব পরীক্ষা করতেও দেখা গিয়েছিল। জলমগ্ন চা-বলয়েও তিনি ত্রাতার রূপে।
অন্যদিকে তিস্তারও জলস্তর বেড়েছে। সে কারণে গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে দফায় দফায় আরও জল ছাড়া হয়েছে। সেচ দফতরের ফ্লাড কন্ট্রোল রুম থেকে পাওয়া শেষ খবরে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা ২ টো, ৩টো ও ৪টেয় তিন দফায় গড়ে ৪০০০ কিউমেক করে জল ছাড়া হয়েছে। এই জল জলপাইগুড়ি সংলগ্ন তিস্তা নদী এলাকায় রাতে এসে ঢুকবে। ফলে আবারও জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে মধ্যরাতে।