Bankura News: অযোগ্য ঘরের চাবি তড়িঘড়ি শিল্পীদের হাতে তুলে দিয়ে বিতর্কে প্রশাসন
Controversy: গরীব এই পটচিত্রীদের শুশুনিয়ার পর্যটনের সাথে যুক্ত করতে সম্প্রতি উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। প্রায় ৬০ লক্ষ সরকারী টাকা খরচ করে শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হয় মডেল গ্রাম। যে গ্রামে সার দিয়ে তৈরী করা হয় চিত্রকরদের বাড়ি, বাড়ি লাগোয়া ওয়ার্কশপ।
ঘরে শৌচালয় নেই। নতুন ঘরে টালির চাল বেয়ে বর্ষার জল ঢুকে ভেসে যাচ্ছে ঘরের মেঝে। অথচ সেই ধরনের ১৫ টি ঘর নিয়েই তৈরী গ্রামই নাকি মডেল গ্রাম। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার পর তড়িঘড়ি সেই মডেল গ্রামের বাড়িগুলির চাবি চিত্রকর শিল্পীদের হাতে তুলে দিয়ে বিতর্কে জড়াল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।
বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পাহাড়ের অদূরেই রয়েছে ভরতপুর গ্রাম। শত শত বছর ধরে এই গ্রামেই বসবাস করে আসছেন ১৫ টি চিত্রকর পরিবার। পাহাড়ের গাছ, পাতা, ডাল, পাথর ও বিভিন্ন রঙের মাটি থেকে সংগ্রহ করা রঙ ব্যবহার করে কাগজের ক্যানভাসে তাঁরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এঁকে যান বিশেষ ধরনের পটচিত্র। একসময় গ্রামে গ্রামে এই পট দেখিয়ে ভিক্ষা করেই চলত চিত্রকরদের সংসার। এখন দিন বদলেছে। পিংলার পটচিত্রিদের মতো ততটা জনপ্রিয় না হলেও ভরতপুরের পটচিত্রের বাজারও ক্রমশ বাড়ছে। গরীব এই পটচিত্রীদের শুশুনিয়ার পর্যটনের সাথে যুক্ত করতে সম্প্রতি উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। প্রায় ৬০ লক্ষ সরকারী টাকা খরচ করে শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হয় মডেল গ্রাম। যে গ্রামে সার দিয়ে তৈরী করা হয় চিত্রকরদের বাড়ি, বাড়ি লাগোয়া ওয়ার্কশপ। জলের সমস্যা মেটাতে খনন করা হয় পুকুর, বসানো হয় সাবমার্সিবল পাম্প ও সৌরবাতি। আগামীদিনে ওই গ্রামে হোম স্টে করারও পরিকল্পনা রয়েছে জেলা প্রশাসনের। গতকাল ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান থেকে এই মডেল গ্রামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই তড়িঘড়ি বাড়িগুলির চাবি তুলে দেওয়া হয় শিল্পীদের হাতে। আর তাতেই বিতর্ক তৈরী হয়। শিল্পীদের দাবী তড়িঘড়ি তৈরী করা এই বাড়িগুলির ছাদের টালি অধিকাংশ ভাঙা। তা দিয়ে বর্ষার জল চুঁইয়ে পড়ে ভেসে যাচ্ছে অধিকাংশ বাড়ির মেঝে। বাড়ি দিলেও এখনো বাড়িগুলিতে তৈরী হয়নি শৌচালয়। বাড়ির কাঠামো বেশ নড়বড়ে। ভারী বৃষ্টিতে যে কোনো সময় ধসে যেতে পারে বাড়িগুলির দেওয়াল। এমন অবস্থায় বসবাসের অযোগ্য এই বাড়িগুলি নিয়ে কী করবেন শিল্পীরা? তা নিয়ে ভেবে পাচ্ছেন না ভরতপুরের পটচিত্রীরা। জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে আগামী দশ দিনের মধ্যে প্রত্যেকটি বাড়ির জন্য শৌচালয় তৈরী করে দেওয়া হবে। পাশাপাশি ভাঙা টালির ছাদও মেরামত করে দেওয়া হবে।