বাঁকুড়া: ‘বিক্ষুব্ধদের বরদাস্ত করা হবে না’ পঞ্চায়েত ভোটে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূল ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু ভোট মিটতেই অন্য ছবি। পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপির জয়ী প্রার্থীদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার স্রোত অব্যাহত বাঁকুড়া জেলায়। অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ঘোষণাকে কার্যত পরোয়া না করেই তৃণমূল দলে ফেরাল নির্দল হিসাবে জিতে আসা দলের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকেও।
উল্লেখ্য, রাজ্যে সদ্য শেষ হওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে কার্যত জয়জয়কার হয়েছে তৃণমূলের। জেলার ১৯০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৬১-তে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতেছে তৃণমূল। আসন সংখ্যার বিচারে ১১ টিতে এগিয়ে বিজেপি। ১৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে ত্রিশঙ্কু অবস্থায়। নির্বাচনের এই ফল ঘোষণার পর থেকেই কার্যত বিজেপির একের পর এক জয়ী প্রার্থী একযোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। গতকালও বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের শালডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য গনেশ চন্দ্র খাঁ যোগ দেন শাসকদলে। একের পর এক বিজেপি জয়ী সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে নির্বাচনে তুলনামূলক খারাপ ফলাফলে কোথাও কী হতাশ হয়েই বিজেপির জয়ী সদস্যরা এভাবে দল ছাড়ছেন? বিজেপি নেতৃত্ব কী কোথাও তাঁদের জয়ী সদস্যদের দলে আটকে রাখতে ব্যার্থ হচ্ছেন?
তৃণমূলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হতেই এভাবে বিজেপি সহ অন্যান্য বিরোধী দল থেকে জয়ী সদস্যরা তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপি অবশ্য সেই যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি তৃণমূল, পুলিশ ও প্রশাসনের চাপ সহ্য করেও অধিকাংশ জয়ী প্রার্থী দলেই আছেন। কেউ কেউ সেই চাপ ও হুমকি সহ্য করতে না পেরে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন।
শুধু বিরোধী দলগুলি থেকেই জয়ী সদস্যদের তৃণমূলে নেওয়া হচ্ছে তাই নয় বহু ক্ষেত্রে নির্বাচনের আগে দলের প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয়ী নির্দল প্রার্থীদেরও দলে ফেরাচ্ছে তৃণমূল। শনিবার তৃণমূল ভবনে শালডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতেরই বালিগুমা গ্রাম সংসদ থেকে জয়ী নির্দল প্রার্থী সৌরভ দে র হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এখানেই তৃণমূলের অবস্থান বদলের প্রশ্ন উঠে আসছে।
এ দিকে, নির্বাচনের পরে দলের বিক্ষুব্ধ জয়ী নির্দল প্রার্থীদের এভাবে দলে ফেরানোয় সমালোচনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরেই। যদিও গতকাল তৃণমূলে যোগ দেওয়া নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য বিক্ষুব্ধ বলে মানতে নারাজ। বিজেপির দাবি, নির্বাচনের আগে তৃণমূল এক কথা বলেছেন আর নির্বাচনের পরে আরেক কাজ করছে।