শালতোড়া: নিখোঁজ গৃহবধূর দেহ মিলল প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্ক থেকে। গলার নলি কাটা দেহ। মহিলার নাম মোনালিসা ঘটক। ঘটনাটি বাঁকুড়ার শালতোড়া থানা এলাকার ঢেকিয়া গ্রামে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে গৃহবধূকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। তারপর প্রমাণ লোপাট করতে সকলের অগোচরে প্রতিবেশীর গোবর গ্য়াসের ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ওই গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মহিলার স্বামীও রয়েছে পুলিশের স্ক্যানারে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার শালতোড়া থানায় ওই গৃহবধূর নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। মহিলার স্বামীর কাজু ঘটক নিজেই গৃহবধূর বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। পুলিশকে জানান স্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আর একইসঙ্গে মহিলার শ্বশুর সুজিত ঘটক ও শাশুড়ি ইতু ঘটককেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশকে জানান তিনি। সেই মতো তদন্তে নামে পুলিশ। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এদিকে থানায় মহিলার বাপের বাড়ির লোকেরা নালিশ জানায় যে পণের দাবিতে অনেকদিন ধরেই মেয়ের উপর শ্বশুরবাড়িতে অত্য়াচার চলত। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দফায় দফায় মহিলার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে মহিলার শ্বশুর-শাশুড়ির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তাতে পুলিশ জানতে পারে, বিষ্ণুপুর থানার হিংজুড়ি গ্রামে এক আত্মীয়র বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছেন মোনালিসার শ্বশুর-শাশুড়ি। সেই মতো অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। আর তাতেই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। পুলিশের একের পর এক প্রশ্নের মুখে কার্যত ভেঙে পড়েন তাঁরা। শ্বশুর-শাশুড়ির থেকেই পুলিশ জানতে পারে প্রতিবেশীর গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্কে দেহ ফেলে দেওয়ার কথা। সেই মতো ওই গোবর গ্যাসের ট্যাঙ্ক থেকে মোনালিসার নলি-কাটা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, এটি ছিল মোনালিসার দ্বিতীয় বিয়ে। বছর ছ’য়েক আগে এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন তিনি। সেই সময়েই কাজুর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে যান মোনালিসা এবং বিয়ে করে নেন। তবে কী কারণে এই খুন, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশকর্মীরা। গৃহবধূর উপর পণ নিয়ে অত্যাচার চালানো হত কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে মোনালিসার স্বামীর কী ভূমিকা ছিল, তাও রয়েছে পুলিশের স্ক্যানারে।