Birbhum: বীরভূমে কি এবার তৃণমূলের নতুন জমানা? লাল মাটির দেশে জেলা পরিষদের মাথায় একদা কেষ্ট-বিরোধী কাজল

Himadri Mondal | Edited By: Soumya Saha

Aug 16, 2023 | 10:25 PM

Anubrata Mondal: গ্রেফতারির আগে পর্যন্ত বীরভূমে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। জেলে বসেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের জয়ের কথা শুনে খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু জেলা পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর কী কেষ্ট মণ্ডল খুব খুশি হতে পারবেন?

Birbhum: বীরভূমে কি এবার তৃণমূলের নতুন জমানা? লাল মাটির দেশে জেলা পরিষদের মাথায় একদা কেষ্ট-বিরোধী কাজল
কেষ্টহীন বীরভূমে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ
Image Credit source: টিভি নাইন বাংলা

Follow Us

বীরভূম: বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হলেন কাজল শেখ। এককালে কেষ্ট-বিরোধী হিসেবেই তাঁর পরিচিতি ছিল। যদিও মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর থেকেই কাজল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি অতীতের কথা মনে রাখতে চান না। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেকে কেষ্টর ‘রাজনৈতিক শিষ্য’ হিসেবেই বলছেন কাজল। মনোনয়ন জমা দিয়ে বলেছিলেন, তিনি ‘টিম অনুব্রতর’ একটি অঙ্গ। সেই কাজল শেখ এবার বীরভূমের জেলা সভাধিপতির পদে বসলেন। জেলাস্তরের সর্বোচ্চ নির্বাচিত প্রশাসনিক পদ হল জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ। তাহলে এবার কি বীরভূমে তৃণমূলের নতুন জমানা শুরু হতে চলেছে? এমন প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।

বীরভূমের রাজনীতি নিয়ে কথা বললে প্রথম যে নামটা মাথায় আসে সেটা অনুব্রত মণ্ডল। নিজের গড় থেকে এখন অনেক দূরে তিনি। কিন্তু গ্রেফতারির আগে পর্যন্ত বীরভূমে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। জেলে বসেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের জয়ের কথা শুনে খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু জেলা পরিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের পর কী কেষ্ট মণ্ডল খুব খুশি হতে পারবেন? কারণ, কানাঘুষো রয়েছে এই কাজল শেখকেই এককালে নিজের দাপটে কার্যত কোণঠাসা করে রেখেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আর এখন সেই কাজল শেখই বসলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে। এর আগে এই পদে ছিলেন অনুব্রত ঘনিষ্ঠ নেতা বিকাশ রায়চৌধুরী। তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে চর্চার ঝড় তুলেছে।

প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বীরভূমে কী তাহলে অনুব্রত যুগের অবসানের পালা শুরু হল? তৃণমূল হাই কমান্ডও কী চাইছে কেষ্ট মণ্ডলের ছায়া থেকে দলের বীরভূমের সংগঠনকে বের করে এনে নতুন করে সাজাতে? নইলে যে কাজল শেখ এককালে অনুব্রতর দাপটে কার্যত সন্যাসের পথে চলে গিয়েছিলেন, তাঁকেই আবার জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদে কেন বসাল তৃণমূল? খাতায় কলমে জেলা সংগঠনের রাশ অবশ্য এখনও কেষ্টর হাতেই। দলের জেলা সভাপতি পদে এখনও রয়েছেন তিহাড়ে বন্দি অনুব্রত। হেভিওয়েট নেতাকে সাংগঠনিক পদ থেকে না সরানো হলেও, জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে নিয়ে আসা হল সেই কাজল শেখকেই।

সদ্য জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ পাওয়ার পর কাজল শেখ অবশ্য বলছেন, তিনি অনুব্রতর ভাব শিষ্য। বলছেন, ‘অনুব্রত মণ্ডল আমার অভিভাবক। এখনও বীরভূম জেলার সভাপতি। তাঁর হাত ধরেই আমার রাজনৈতিক হাতেখড়ি। তিনি বীরভূম জেলায় আমাদের সঙ্গে বিগত দিনেও ছিলেন, আছেন এবং আগামী দিনেও থাকবেন।’ কেষ্টকে মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হয়েছে বলেও দাবি তাঁর।

কাজল শেখ নিজেকে অনুব্রতর শিষ্য হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন বটে, কিন্তু অঙ্কটা কী এতটাই সোজা? বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের মুখে কাজল অনুগামীদের জন্য যে সতর্ক বার্তা। বলছেন, ‘তোমরা যে ব্যবহার করবে, সেটাই কিন্তু কাজলের পরিচয় হবে। তোমরা যদি মনে করো, সভাধিপতি আমার, বাইক নিয়ে গুন্ডামি করি… সেটা চলবে না কিন্তু। তোমরা যা করবে, মনে রেখো, তোমার প্রিয় মানুষটা কিন্তু খারাপ হবেন।’

প্রাক্তন জেলা পরিষদ সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী অবশ্য নিজের জায়গায় স্বাগত জানাচ্ছেন কাজলকে। কিন্তু বিরোধী শিবির থেকে উড়ে আসছে কটাক্ষ। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। কাজল শেখের হাত ধরে কি বীরভূমে নতুন জমানা শুরু হচ্ছে? যদিও এমন তত্ত্ব মোটেই মানতে নারাজ কুণাল। বলছেন, ‘এমন কোনও বিষয় নয়। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছেন। ফলে তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতির দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করছেন।’

Next Article