বালুরঘাট: একদিনে কার্যত ছাইয়ের স্তূপে পরিণত হয়েছে বালুরঘাটে (Balurghat) জনস্বাস্থ্য কারিগারি দফতর। রাত পর্যন্তও আগুন নেভানোর কাজ করেছেন দমকল কর্মীরা। এদিকে সকালে সেখানে দেখা গেল এক অন্য ছবি। ভগ্নপ্রায় অফিসে বাজছে ফোন। বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে আওয়াজ। ফোন বাজলেও ভেতরে যাওয়ার উপায় নেই। কে ফোন করছে, কার ফোন বাজছে তাও জানা যাচ্ছে না।
এদিকে আগুন লাগার পর বিল্ডিংয়ের যে অংশগুলো এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে সেগুলিও যে কোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। সে কারণেই ভিতরে কাউকে যেতে নিষেধ করেছে দমকল। এদিকে শুক্রবার বালুরঘাটে জনস্বাস্থ্য কারিগারি দফতরে আগুন লাগার সময় অফিসের ভেতর থেকে কর্মীরা প্রাণভয়ে হুড়োহুড়ি করে বেরিয়ে এসেছিলেন। তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এক দুজন পড়ে গিয়ে জখমও হন। তাড়াতাড়ি করে বেরোতে গিয়ে অনেকের মোবাইল, ব্যাগ-সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অফিসের ভিতরে রয়ে যায়। প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আর তা বের করতে পারছেন না অফিসের কোনও কর্মীই।
এদিকে কী থেকে ওই বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে দমকলের প্রাথমিক অনুমান অফিসের গোডাউনে মজুত রাখা ছিল ক্লোরিন। সেখান থেকে হয়ত কোনও কারণে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পুরো ঘটনার তদন্ত করছে বালুরঘাট দমকল কর্মীরা।
এদিকে গভীর রাত পর্যন্ত দমকল কর্মীরা আগুন নেভান। শুক্রবারের পর শনিবার সকালেও দেখা গেল ওই জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অফিসের কম্পিউটার, প্রিন্টার, এসি মেশিন-সহ অন্য যন্ত্রাংশ। গতকাল রাতেই বেশকিছু আধপোড়া নথি উদ্ধার করেছে অফিসের কর্মীরা। শনিবার সকালে অফিসে এসে পৌঁছান জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার শুভব্রত কর। ঘুরে দেখেন ঘটনাস্থল৷ গতকাল তিনি ছুটিতে ছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই বালুরঘাটে আসেন। এদিকে শনি ও রবিবার সরকারি দফতরগুলিতে ছুটি রয়েছে। সোমবার থেকে ভেঙে পড়া অফিস অস্থায়ীভাবে সরানো হবে পিএইচই চত্বরে থাকা বাংলোতে।
এ ঘটনায় কোনও প্রাণহানি না হলেও নতুন ১২ টি-সহ প্রায় ৩০ টি কম্পিউটার নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য যন্ত্রাংশ ও গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট হয়েছে। আর কী কী ক্ষতি হয়েছে তার হিসাব এখনই করা যাচ্ছে না। কাজ চলছে। পুরো বিষয়টি দমকল ও পুলিশ প্রশাসন দেখছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ যে বেশ খানিকটা বেশি তা মনে করছেন সকলেই। এদিকে শনিবার সকালেও ভাঙা বিল্ডিং থেকে হাল্কা ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। ভাঙা বিল্ডিংয়ে যাতে কেউ যেতে না পারে তার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নজর রাখছেন দমকলকর্মীরা।