বালুরঘাট: মানসিক বিভাগ থেকে পালাল রোগী। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট (Balurghat) জেলা হাসপাতালের মানসিক বিভাগের ঘটনা। বুধবার দুপুরে মানসিক বিভাগের দরজা ভেঙে ও প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায় আনারুল হোসেন (২৪) নামে ওই রোগী। হাসাপাতালের কর্মীরা জানাচ্ছেন পালানোর সময় বারবার সে বলতে থাকে, ‘আমি পাগল নয়। আমাকে জোর করে কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’ এমনভাবেই বলতে বলতে সকলের সামনে দিয়ে পালিয়ে যায় আনারুল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসপাতাল চত্বরে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক বিভাগের অবস্থা বেহাল। নিরাপত্তা নিয়েও বারবার উঠেছে প্রশ্ন। তারমধ্য়েই এ ঘটনায় অস্বস্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনায় বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ অগস্ট গঙ্গারামপুর থেকে ওই রোগীকে তাঁর পরিবার বালুরঘাট হাসপাতালের মানসিক বিভাগে ভর্তি করে। এরপর থেকে ওই যুবক একাধিকবার পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি। অবশেষে এদিন পেছনের একটি দরজা ভেঙে ওই ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এরপরে প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়। যার ফলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে মানসিক বিভাগের মূল ভবনের পরিকাঠামো নিয়ে। এমনতে ভবনটি বেশ পুরনো। জানালা-দরজা গুলিতেও লেগেছে বয়সের ছাপ। যার ফলে সহজেই ওই রোগী দরজা ভেঙে পালাতে সমর্থ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্ররে খবর, এই বিভাগে বর্তমানে এখন প্রায় ১২ জন রোগী রয়েছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই মাঝেমধ্যে হিংস্র হয়ে উঠছেন। তেমন পরিকাঠামো না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যা সামাল দিতে সমস্যার মধ্যে পড়ছে। রোগীদের দেখাশোনার জন্য নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। কিন্তু, তাঁরাও সবসময় সামাল দিতে পারেন না। এছাড়াও ওই বিভাগের একপাশে সংশোধনাগারের রোগীদেরও অনেক সময় রাখা হয়। যার ফলে নিরাপত্তার জন্য সর্বদা পুলিশ থাকে। কিন্তু, তাঁরা কেন আনারুলকে ধরতে পারল না তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
প্রত্যক্ষদর্শী সোনালী শীল বলেন, আমি হাসপাতালে এসেছিলাম। হটাৎ দেখলাম, একজন রাস্তায় এসে বলছে, সে পাগল না। জোর করে কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’ এই বলেই সে পালিয়ে গেল। কিন্তু কেউ তাকে আটকাতে পারল না। পরে জানতে পারলাম সে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছে। এমনটা হলে মানসিক বিভাগের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো দরকার।
এ বিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, আজ এক রোগী মানসিক বিভাগের একটি পেছনের দরজা ভেঙে প্রাচীর টপকে পালিয়েছে। আমরা ওই রোগীর ব্যাপারে বালুরঘাট থানায় জানিয়েছি। তবে মানসিক বিভাগের পরিকাঠামো ভাল নেই। পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। অন্যদিকে এবিষয়ে বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা বলেন, ওই রোগীর খোঁজ চলছে। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।