দার্জিলিং: পাহাড়ে এবার পঞ্চায়েতের লড়াই ছিল কার্যত দ্বিমুখী। একদিকে শাসকের জোট, অন্যদিকে বিরোধীদের মহাজোট। তৃণমূল ও অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মধ্যে এক অঘোষিত জোট হয়েছিল। আবার বিজেপির নেতৃত্বে এক ছাতার তলায় এসেছিল হামরো পার্টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সহ পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি। জোর চর্চা হয়েছে পাহাড়ে বিরোধীদের সেই মহাজোট নিয়ে। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, প্রায় মুখ থুবড়ে পড়ল বিজেপি। দার্জিলিঙের হাতে গোনা কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বিজেপি। চিমনি-দেওরালি, ঘয়াবাড়ি-২ ও রিশপ – শুধুমাত্র এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই জয় পেয়েছে বিজেপি। দার্জিলিয়ে মোট ৭০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র তিনটিতেই পদ্ম ফুটেছে।
এদিকে বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে ১৫টিতে ত্রিশঙ্কু হয়েছে। ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দলরা জয়ী হয়েছে। বাকি সবগুলিই জিতে নিয়েছে পাহাড়ে তৃণমূলের বন্ধু দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। দার্জিলিঙের মতো কালিম্পঙেও চওড়া হাসি অনিত থাপার দলের। কার্যত একতরফা জয় দুই পাহাড়ি জেলাতেই। কালিম্পঙে মোট ৪২টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে ৩০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে সহজ জয় পেয়েছে অনিত থাপার দল। বাকিগুলির মধ্যে দুটিতে বিজেপি জিতেছে, সাতটিতে নির্দলরা। তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
উল্লেখ্য, পাহাড়ের রাজনীতিতে বরাবর একটি ফ্যাক্টর হয়ে এসেছে আঞ্চলিক দলগুলি। বর্তমানে জিটিএর বোর্ডে রয়েছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক রয়েছে। সরাসরি জোট না হলেও অনিত থাপাদের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের সম্পর্ক বেশ মসৃণ। এবারের ভোটে তৃণমূল ও তাদের বন্ধু দলের বিরুদ্ধে অন্যান্য আঞ্চলিক পাহাড়ি দলগুলিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছিল বিজেপি। কিন্তু তাতেও শেষ পর্যন্ত বিশেষ ফায়দা হল না। হাতে গোনা কিছু পঞ্চায়েতের দখল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল পদ্ম শিবিরকে।