দার্জিলিং: ছয় বছর পর ফের বনধ দেখতে চলেছে পাহাড়। গোর্খাল্যান্ড (Gorkhaland) ইস্যুতে ২০১৭ সালে পাহাড় কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। এবারও সেই গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকলেন বিনয় তামাংরা। যা নিয়ে ফের সরগরম হতে চলেছে পাহাড়। আগামিকাল থেকেই শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক। স্বভাবতই এই বনধ ডাকার ফলে আতান্তরে পড়েছেন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। বনধ রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে সব রকমের প্রস্তুতির আশ্বাস মিললেও, পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সেই আশ্বাসে কতটা চিড়ে ভিজবে সন্দেহ রয়েছে খোদ অভিভাবকদের। মঙ্গলবার পাহাড়ে (Darjeeling) দাঁড়িয়ে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে বনধ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সাধারণত পাহাড়ে দোকানপাট বন্ধ থাকে। সে দিকটা মাথায় রেখেই এ দিন বিনয় তামাংরা বনধ ডেকেছেন বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যে একদিনের প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন নয় জিটিএ-এর সদস্য। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হবে। জিটিএ মসনদে ক্ষমতাসীন অনিত থাপারা এবং দার্জিলিং পুরসভার শাসক দলের নেতারা এ দিন রাস্তায় নেমে বনধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানা যাচ্ছে। ম্যাল-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন জায়াগায় দোকানপাট খোলা রাখার আহ্বান জানাবেন তাঁরা। যানবাহনকে সচল রাখার সর্বত্র চেষ্টা করা হবে। পর্যটকদের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে।
সূত্রের খবর, প্রশাসন তরফে স্পষ্ট বার্তা রয়েছে বনধের দিন কোথাও কোন রকম অশান্তি তৈরি হলে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করা হবে। গতকাল মুখ্যমন্ত্রীও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নিয়ম মেনে আন্দোলন না করলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। উল্লেখ্য, সোমবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরই বিনয় তামাংরা এর প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বনধ ডাকেন। এই প্রতাবাদে হাত মিলিয়েছেন বিমল গুরুংও। ২০১৭ সালে পাহাড় অশান্তির নেপথ্যে বিমল গুরুয়ের প্রত্যক্ষ হাত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই বৃহস্পতিবারের বনধে অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না প্রশাসনের তরফেও।
এই বনধকে সমর্থন করতে দেখা যায়নি রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিকে। বিরোধীদল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আমরা এ বনধকে সমর্থন করি না। তবে, পাহাড়, উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল, সুন্দরবনের বঞ্চনা নিরসন হওয়ার দরকার।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী শাসক দলকে তোপ দেগে বলেন, “ওরা যখন বিরোধী ছিল ৭৪ বার বনধ ডেকেছে। কোনও রাজনৈতিক কারণে নয়, ব্যক্তিগত কারণে এই বনধ ডাকা হত। পাহাড়ের মানুষ শান্তি চায়। সেই পাহাড়কে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বাম শাসনে তা পারেনি। ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজেপির হাত ধরে পাহাড়ে অশান্তি তৈরি হচ্ছে।”