জলপাইগুড়ি: জেলে মজুরি পাচ্ছেন না বন্দিরা। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করলেন শ্রমিক নেতা। জামিনে মুক্ত সিপিএমের (CPIM) ৫ শীর্ষ নেতাকে ফুল মালা দিয়ে বরণ করলেন সলিল আচার্য, সমন পাঠক সহ অন্য নেতা কর্মীরা। SFI অফিস দখল কাণ্ডে বুধবার রাতে গ্রেফতার হন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তথা বিশিষ্ট চা শ্রমিক নেতা জিয়াউল আলম, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পীযূষ মিশ্র, শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায়, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুদীপ চক্রবর্তী, প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএর নেতা জ্যোতি বিকাশ কর।
এই ৫ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এরপর তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। সোমবার এই মামলার শুনানি ছিল। CJM এর আদালত ৫ জনকেই জামিনে মুক্তি দিয়েছে বলে খবর।
সোমবার রাতে সিপিএম নেতারা জেল থেকে বেরিয়ে এলে তাদের সংবর্ধনা জানান জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সিপিএমের প্রচুর কর্মী। জেল থেকে বেরিয়ে আসা নেতাদের মালা পরিয়ে দেন সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, দার্জিলিং এর প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সমন পাঠক,নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝাঁ সহ অন্যরা। এরপর তাঁদের নিয়ে শহর জুড়ে মিছিল করে জেলা দফতরে ফিরে যান নেতা কর্মীরা।
উল্লেখ্য, বুধবার সিপিএম পার্টি অফিসের সামনে এসএফআই-এর অফিস দখল করতে যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। অভিযোগ এমনই। সেই সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মীদের সঙ্গে এসএফআই কর্মীদের মারপিটের ঘটনায় এই ৫ নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর এই ঘটনায় সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে প্রতিবাদে নামেন সাধারণ মানুষ-সহ বিশিষ্টজনেরা।
জামিনে মুক্তি পেয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জিয়াউল আলম বলেন, আমাদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশের একাংশ এই নিয়ে আমাদের কাছে আফসোস করেছে। তবে আশা করব রাজ্য সরকার পুলিশকে যেন এইভাবে ব্যাবহার না করে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, এই প্রথম জেলে থাকলাম। কিন্তু জেলে থেকে জানতে পারলাম যারা জেলবন্দি রয়েছেন তাঁরা গত দেড় বছর ধরে মজুরি পাচ্ছেন না। এ ছাড়া জেলের ভেতর জল নেই, ফ্যান নেই, পর্যাপ্ত বাতাস আসে না। ভেতরে খুব কষ্টে আছে বন্দিরা।
অপরদিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবজিৎ সরকার বলেন, সেদিন দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে বিবাদ হচ্ছিল। তারমধ্যে ঢুকে পড়ে আরও গন্ডগোল বাড়িয়ে দেয় সিপিএম নেতারা। আজ জামিন পেলেন। কিন্তু, এই মামলা চলবে। এদের নিশ্চয়ই শাস্তি হবে।
ঘটনায় কারা মন্ত্রী অখিল গিরি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি টেলিফোনে জানান, এইসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলে যথেষ্ট পরিমান পানীয় জলের ব্যাবস্থা রয়েছে। যারা মজুরি পান তাদের টাকা প্রথমে অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এরপর তারা সারা মাসে যদি জেলের ভেতরে থাকা ক্যান্টিন থেকে কিছু কিনে থাকেন তবে সেই টাকা কেটে বাকি টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয়। এছাড়া ফ্যান কিছু কম থাকতে পারে। যেগুলি খতিয়ে দেখে দ্রুত লাগিয়ে দেওয়া হবে।