জলপাইগুড়ি: SFI অফিস দখল নিয়ে দফায় দফায় TMCP ও SFI-এর সংঘর্ষ। জখম দুই রাজনৈতিক পক্ষ ও পুলিশ মিলিয়ে অন্তত দশ। গ্রেফতার CPM এর ৫ শীর্ষ নেতা। যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ক্ষোভের আঁচ এবার গিয়ে পড়ল জলপাইগুড়িতে। বুধবার যাদবপুরে তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের উপর হামলার প্রতিবাদে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এসএফআই কার্যালয় দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। এর জেরেই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় জলপাইগুড়িতে।
বুধবার রাত্রিবেলা কদমতলা মোড়ে জমায়েত হয়ে TMCP কর্মীরা মিছিল করে সিপিএম এর জলপাইগুড়ি জেলা কার্যালয় সুবোধ সেন ভবনের সামনে পৌঁছতেই ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। শুরু হয়ে যায় পাথর বৃষ্টি। এরপর তা গড়ায় দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে। খবর পেয়ে র্যাফ সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে পৌঁছে যায় জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্দীপ সেন, ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পাল, ডিএসপি ট্রাফিক অরিন্দম পাল চৌধুরী। তাঁদের সামনেই দুই যুযুধান পক্ষের পাথর বৃষ্টি চলে। একে অপরের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খায় পুলিশ।
ঘটনায় জখম হন দুই রাজনৈতিক দল মিলিয়ে অন্তত দশ জন। জখমদের মধ্যে এসএফআই এর মহিলা নেত্রীরাও রয়েছেন। তাঁদের সকলকে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার ওসি ট্রাফিক বাপ্পা সাহা। বর্তমানে তিনি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।
এদিন আগাম খবর পেয়ে অশান্তি এড়াতে আগেভাগেই সিপিএম অফিসের সামনে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার সহ পুলিশ কর্মীরা। তৃণমূল কর্মীরা মিছিল করে পুলিশের সামনে আচমকাই এলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তৃণমূল কর্মীরা সিপিএম অফিসের সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় জলপাইগুড়ি শহরে। তড়িঘড়ি বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকার দখল নেয়।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য কমিটির সদস্য দেবজিৎ সরকারের দাবি, “আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর এসএফআই ও সিপিএমের নেতা কর্মীরা পাথর ছোড়ে। বেশ কয়েকজন তৃণমূল ছাত্র নেতা জখম হয়েছেন।” এসএফআই এর রাজ্য কমিটির সদস্য প্রভাকর সরকার বলেন,”আমাদের পার্টি অফিস দখল করতে এসেছিল তৃণমূল। তারা অন্যায় ভাবে আমাদের উপর হামলা চালায়। প্রতিরোধ করা হয়েছে। আমাদের দশজন আহত।”
অপদিকে, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “পুলিশ অন্যায় ভাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর অন্যতম সদস্য জিয়াউল আলম, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পীযুষ মিশ্র, শক্ষক সংগঠন এবিটিএর জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায়, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুদীপ চক্রবর্তী, প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা জ্যোতি বিকাশ রায় সহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। উল্টে পুলিশ আমাদের নেতৃত্বদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশের এই অগণতান্ত্রিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে তীব্র প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হবে।”