ঝাড়গ্রাম: প্রার্থী দিতে পারল না দল! না, এ অভিযোগ এবার বিরোধীদের তরফ থেকে না। এবার শাসকশিবিরই প্রার্থী দিতে পারল না। ঝাড়গ্রাম শহরের কাছেই রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জোড়াখালি ১৫ নম্বর সংসদে পার্থী দিতে পারল না শাসক দল। রাজ্যে যেখানে বিরোধীরা অভিযোগ তুলছে, তাঁদের পার্থী দিতে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল, সেখানে জঙ্গলমহলে দেখা গেল উল্টো চিত্র। নেপথ্যে সম্ভবত কুড়মি আন্দোলন। রাধানগর অঞ্চলের জোড়াখালি সংসদে তিনজন পার্থী হয়েছে এবং তিনজনই নির্দল। কুড়মি অধ্যুষিত বেশিরভাগ জায়গাতেই উল্লেখযোগ্য নির্দল প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছে কুর্মি সমাজের হয়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, তাহলে কি কুড়মি ভোট নিয়ে সিদুঁরে মেঘ দেখছে শাসক দল তৃণমূল। কুড়মি ভোট জঙ্গল মহলে একটা ফ্যাক্টর। জঙ্গলমহলের ভোটে এবার নয়া সমীকরণ হতে চলেছে কুড়মি ভোট ব্যাঙ্কে।
জাতিসত্তার আন্দোলন নিয়ে বেশ কয়েকটি কুড়মি সংগঠন গত দু’বছর ধরে ঝাড়গ্রাম বাঁকুড়া পুরুলিয়াতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ২৬ মে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নব জোয়ারের কনভয়ে কুড়মিদের বিক্ষোভ এবং হামলার ঘটনায় পুলিশ ও সিআইডি যৌথভাবে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সারির ১১ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করে। সেই গ্রেফতারির পর ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি এলাকায় এলাকায় বিক্ষোভ এবং পথসভা করে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরের দিনেই ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এবার কুড়মি সমাজ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তারপর থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে নির্দল হয়ে কুড়মি সমাজের লোকজন ভোটে দাঁড়িয়েছেন। কুড়মি নেতা অশোক মাহাতো বলেন, “শাসকদল আমাদের কোনওভাবেই দেখেনি। এবার নিজেদের অধিকারটা বুঝে নিতে হবে। তাই আমাদের লোক নির্দল হিসাবে এবারের নির্বাচনে লড়বে।”
কুড়মিদের আন্দোলন বাংলার রাজনীতিতে একটা বড় ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, কুড়মি সমাজের যে ভোটব্যাঙ্ক তার শাসকদলের পক্ষেই ছিল, এবার সেই কুড়মি সমাজ পৃথকভাবে রাজনৈতিক ভাবে ময়দানে নামায় যথেষ্ট এই বেগ পেতে হবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।
ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি প্রসূন সরঙ্গি বলেন, “আমার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলছি। আমাদের কাউকে নিয়েই কোনও সমস্যা নেই।”