কালিম্পং: বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য শুরু থেকেই বার্তা দিয়ে আসছেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে কালিম্পং থেকে আরও একবার সেই বার্তাই দিলেন তিনি। শুক্রবার কালিম্পং কলেজের ৭৫ বছর উপযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় রাজ্যপালের ভাষণে বার বার সেই প্রসঙ্গই উঠে এল। একইসঙ্গে নতুন জল্পনাও উস্কে দিলেন বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ‘ছাত্র-উপাচার্য’ নিয়ে। ঠিক কী বললেন রাজ্যপাল? কালিম্পং কলেজে বক্তব্য রাখার সময় সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘দেশের মধ্যে প্রথমবার পশ্চিমবঙ্গে ছাত্র-উপাচার্য হবে। যেসব উজ্জ্বল-মেধাবি পড়ুয়া স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন এবং গবেষণা করছেন, তাঁরাই আগামীতে উপাচার্য হবেন। দেশে এমন ঘটনা এই প্রথমবার হবে।’
এই ‘ছাত্র-উপাচার্য’-র ধারনা আগামী দিনে গোটা বিশ্বের কাছে একটি ট্রেন্ডে পরিণত হবে বলেই মনে করছেন রাজ্য়পাল। কালিম্পং কলেজে বক্তব্য রাখার সময় রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাক্ষেত্রে থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। শুধু তাই নয়, সমাজ থেকে হিংসা দূরীকরণেরও ডাক দিয়েছেন তিনি। এর জন্য সকলকে একসঙ্গে এগিয়ে এসে হাতে হাত মিলিয়ে উদ্যোগ নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আগামী দিনে পড়ুয়ারাই যে ভারতের ভবিষ্যৎ স্থির করবে, এমনও মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ‘এডুকেশন হাব’ হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে রাজ্যপাল হিংসা-অশান্তি দূর করতে, দুর্নীতিতে নির্মূল করতে একাধিকবার একাধিকভাবে বার্তা দিয়েছেন। আজ আবারও বাংলার তথা দেশের নতুন প্রজন্মের সামনে সেই বার্তাই দিয়ে রাখলেন তিনি। স্মরণ করলেন, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুরে মতো মনীষিদের কথাও। স্বাধীনতা আন্দোলনে বিনয়-বাদল-দীনেশ, ভগৎ সিং কীভাবে দেশের জন্য আত্ম বলিদান দিয়েছেন, সেই কথাও তরুণ প্রজন্মকে মনে করিয়ে দেন রাজ্যপাল।
তবে এই ‘ছাত্র-উপাচার্য’ বিষয়টি ঠিক কীরকম, সে বিষয়ে কোনও ব্যাখ্যা স্পষ্টভাবে দেননি রাজ্যপাল। এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের যা নিয়ম, সেই অনুযায়ী কাউকে উপাচার্য (স্থায়ী) পদে আসতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। কিংবা গবেষণা ও শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। যা, শিক্ষাক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির নেতৃত্বদানের ক্ষমতাকে প্রমাণ করে। এক্ষেত্রে রাজ্যপাল ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, শিক্ষা সংক্রান্ত গবেষণার যে ক্ষেত্রটি রয়েছে, সেই সংক্রান্ত কোনও মাপকাঠি থাকছে কি না, সেই বিষয়ে রাজভবন থেকে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট কোনও ধারনা পাওয়া যায়নি।