শিলিগুড়ি: ভারতের বিক্রম চাঁদের মাটিতে। বুধবারই ভারতের চন্দ্রযান-৩ পৌঁছেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। ল্যান্ডার বিক্রমের চাঁদে ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’-এর ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীদের এই অভিযানে অংশ নিয়েছে বাংলার একাধিক কৃতী সন্তান। এরকমই একজন শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা রূপর্ণা দত্ত। চন্দ্রযানের নেভিগেশন সিস্টেমে যে বিজ্ঞানীদের দল কাজ করেছে, ইসরোর সেই দলে ছিলেন ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশনের ছাত্রী রূপর্ণাও।
ইসরোর একাধিক ল্যাব কাজ করেছে চন্দ্রযান-৩ মিশনে। তার মধ্যে ছিল অরবিটস ইন্ডিয়া এরোস্পেস (Orbitx India Aerospace) ল্যাবের চল্লিশ বিজ্ঞানীর একটি দল। সেই দলেরই কনিষ্ঠতম সদস্য রূপর্ণা। তাঁর কাজ ছিল, চন্দ্রযানের ‘গাইডেন্স অ্যান্ড নেভিগেশন সিস্টেম’ তৈরি করা। এই ল্যাবে এ রাজ্যের একমাত্র সদস্য ছিলেন শিলিগুড়ির কন্যা। তবে বেশ কয়েকজন বাঙালি ছিলেন ল্যাবে।
গত চার মাসে একটু একটু করে এগিয়েছে রূপর্ণাদের কাজ। তাঁর ওয়ার্ক ফ্রম হোমই ছিল। মিশন শুরুর পর চরম উৎকন্ঠা ছিল ঠিকই, তবে তাতে আত্মবিশ্বাসে যে এক বিন্দুও ভাঁটা পড়েনি, সে কথা জানান রূপর্ণা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে নিজের বাড়িতে বসেই তিনি বলেন, “২০২৩ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর ইসরোয় কাজে যোগ দিই। তার আগে ২০২১ সালে নাসার মার্স মিশনে ফুয়েল কনসার্ভেশন নিয়ে আইডিয়া পাঠিয়ে পুরস্কার পেয়েছিলাম। নাসা তাদের প্রতিটি লঞ্চে আমাকে ভার্চুয়াল গেস্ট হিসাবে ঘোষণা করেছে। এখন ইসরোর রিসার্চ বিজ্ঞানী।”
স্পেস সায়েন্স নিয়ে রূপর্ণার আগ্রহ ছিল। এরপরই ইসরোয় কাজের সুযোগ এবং চন্দ্রযান-৩ মিশনে অংশ নেওয়া। বুধবার সন্ধ্যায় ভারতের বিক্রম যখন চাঁদে নামছে, সেই মুহূর্তের কথা বলতে গিয়ে রূপর্ণা বলেন, “কী যে চলছিল সেটা কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। বুকের ভিতর মনে হচ্ছিল উথাল পাতাল চলছে। যখন লুনার সারফেসে বিক্রম নামল একজন ভারতীয় হিসাবে, একজন বাঙালি হিসাবে আমার ভিতরে যে কী হচ্ছিল বলে বোঝাতে পারব না। বিজ্ঞানী হিসাবে কাজ করতে পেরে আমি সত্যি গর্বিত ভারতীয়।”