মুর্শিদাবাদ: যাদবপুরের পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক ডজন গ্রেফতারি হয়ে গিয়েছে। গতকালই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের তালিকায় রয়েছেন হিংমাশু কর্মকারও। যাদবপুরের প্রাক্তনী। অঙ্কে স্নাতকোত্তর। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাট চুকে যাওয়ার পরেও বহাল তবিয়তে থেকে গিয়েছিল হস্টেলে। গতরাতে হিংমাশুর গ্রেফতারির খবর পৌঁছে গিয়েছে তাঁর মুর্শিদাবাদের বাড়িতেও। মুর্শিদাবাদের নিমতিতায় দুর্গাপুর কর্মকারপাড়ায় বাড়ি হিমাংশুর। ‘গুণধর’ পুত্রের গ্রেফতারির খবর ছড়ানোর পর এদিন সকাল থেকেই কর্মকারপাড়ায় হিমাংশুদের বাড়ি তালাবন্ধ। ছেলের গ্রেফতারির কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁর মা।
মুর্শিদাবাদের বাড়িতে একাই থাকেন তিনি। স্বামী প্রয়াত। হিমাংশু-ই এখন তাঁর জীবনের সব আশা-ভরসা। সেই ছেলের গ্রেফতারির খবর কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। কেন বাড়ি তালাবন্ধ, সেই খোঁজখবর করতে গিয়ে জানা গেল, হিমাংশুর মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ছেলের গ্রেফতারির খবর পেয়ে। এক প্রতিবেশী জানালেন, আজ সকালেই তাঁকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কর্মকারপাড়ায় হিমাংশুদের বাড়ির পাশেই থাকেন তাঁর কাকা। তিনি বলছেন, ‘ও তো গণিতে পিএইচডি করত। কেন হস্টলে ছিল, সেটা আমি জানি না। আমার জানার কথাও না। তবে ও এক নম্বর জুয়েল ছেলে।’ আর ভাইপো যে এক নম্বর রত্ন, সে বিষয়ে কোনও সংশয় নেই তাঁর মনে। এ বিষয়ে একেবারে ‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট’ নিশ্চিত তিনি।
এক প্রতিবেশী জানাচ্ছেন, কিছুদিন আগেই হিমাংশুর মা দুর্ঘটনায় চোট পেয়েছিলেন। তারপর গতরাতে ছেলের গ্রেফতারির খবর শুনে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছেন তিনি। তাতে আবার সেই জায়গাতেই চোট লেগেছে। হিমাংশুর মাকে ওই ঘটনার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেই জানাচ্ছেন ওই প্রতিবেশী। তবে হিমাংশুকে এলাকাবাসীরা ভাল, মেধাবি ছেলে হিসেবেই চেনেন। হিমাংশু যে এমন কিছু করতে পারে, তা মোটেই মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। তাঁদের আশা, নিশ্চয়ই হিমাংশু নির্দোষ প্রমাণিত হবে। কিন্তু স্নাতকোত্তরের পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও কেন হিমাংশু হস্টেলে থেকে গিয়েছিল, সেই নিয়ে কেউ কোনও উত্তর দিতে পারছেন না।