নওদা: পদ্ম ও ঘাসফুল শোভা পাচ্ছে একই বৃন্তে। গাছ দেখতে হলে যেতে হবে মুর্শিদাবাদের নওদায়। তৃণমূলের প্রধান, বিজেপির উপপ্রধান। মিলেমিশে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন বিজেপি আর তৃণমূলের।
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার নিশানা করে যাচ্ছেন বিজেপিকে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি নাগাড়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন শাসক দলকে। কিন্তু তাতে কী! পঞ্চায়েতের বোর্ড তো গড়তে হবে! অতঃপর বিজেপির সমর্থন নিয়ে এবার বোর্ড গঠন করল তৃণমূল। তৃণমূলের জয়ী সদস্য আতিকুল শেখ হলেন পঞ্চায়েতের প্রধান। আর বিজেপির জয়ী সদস্য মানবিকা মণ্ডল হলেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। মঙ্গলবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল মুর্শিদাবাদের নওদায় সর্বাঙ্গপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। ২৬ আসনের ওই পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান উভয় পদের জন্যই দু’টি করে নাম এসেছিল। তাই ভোটাভুটি করতে হয়। ২৬ জন সদস্যের মধ্যে একজন ভোটাভুটিতে অংশ নেন না। বাকি ২৫ জনের ভোটাভুটিতে ১৬-৯ ভোটে প্রধান ও উপপ্রধান বাছা হল সর্বাঙ্গপুরের পঞ্চায়েত বোর্ডে।
উল্লেখ্য, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বাঙ্গপুর থেকে ১১টি আসন জিতেছে তৃণমূল। কংগ্রেস ও সিপিএম উভয় শিবির পাঁচটি করে আসন জিতেছে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে দু’টি আসন। বাকি তিনটি আসন জিতেছেন নির্দল প্রার্থীরা। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কংগ্রেসের একজন জয়ী সদস্য ‘উন্নয়নের ধারায়’ সামিল হয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে কংগ্রেস থেকে ছিনিয়ে আনা প্রার্থী-সহ তৃণমূলের শক্তি দাঁড়ায় ১২। তারপর আজ পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের সময় নিজেদের ১২ জন, দুই জন নির্দল সদস্য ও বিজেপির দু’জন সদস্যের সমর্থন পেল তৃণমূল।
পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শেষে উপপ্রধান পদ পেয়ে বেজায় খুশি বিজেপির মানবিকা মণ্ডল। তৃণমূলের বোর্ডকে সমর্থনের কথা নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। কিন্তু কেন হঠাৎ বিজেপির জয়ী সদস্যরা তৃণমূলের বোর্ডকে সমর্থন করলেন? প্রশ্ন শুনে বিজেপির উপপ্রধান বলছেন, ‘মানুষের উন্নয়ন করার জন্যই।’ বিজেপির দুইজন জয়ী সদস্যই তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সমর্থন করেছে বলে জানাচ্ছেন তিনি। এদিকে প্রধান হওয়ার পর তৃণমূলের আতিকুরও বলছেন, ‘মানুষের উন্নয়নের জন্য সবসময় পাশে থাকব।’
সত্যি, উন্নয়নের বড়ই মায়া। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে নওদার এই দৃশ্য যেন এটাই বার্তা দিচ্ছে। একদিকে যখন উঁচু তলার নেতৃত্ব একেবারে সম্মুখসমরে একে অপরের সঙ্গে। তখন নীচু তলায় সব মিলেমিশে একাকার।