নদিয়া: সোমবারই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে যাদবপুরে পড়তে গিয়ে মৃত্যু হওয়া পড়ুয়ার। মঙ্গলবার তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত ও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। এ দিন মৃত ছাত্রের মামার বাড়ি রানাঘাটে এলেন তাঁরা। পরিবারের সঙ্গে করার পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন তাঁরা।
ছাত্রমৃত্যুর পর প্রথমবার সোমবার প্রতিক্রিয়া দেন রেজিস্ট্রার। ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। যদিও স্নেহমঞ্জু জানান, তিনি অসুস্থ ছিলেন। সেই কারণে ছুটিতে ছিলেন। তবে এই মর্মান্তিক খবর শোনার পরই ঘরে বসেই যাবতীয় দায়িত্ব সামলেন। শুধু তাই নয়, মৃত পড়ুয়াকে সন্তানসম বলেন। তারপর প্রতিক্রিয়া দিতে দিতেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন তিনি। বলেন, “এর আগে ২০১৯ এ এই ঘটনা ঘটেছে। আর যেন কোনও সন্তানের এই পরিণতি না হয়। আমরা সব চেষ্টা করছি। অপরাধীরা যাতে দ্রুত শাস্তি পায় তাই চাইছি।”
রেজিস্ট্রার ও সহ উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার পর যাদবপুরের মৃত ছাত্রের মামি বলেন, “আমরা বলেছি, ওঁরা কেন ফোন করে আমাদের জানাননি। ওঁরা পৌঁছে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু আমরা গিয়েছি পরে। ওঁদের তো আমাদের জানানো কর্তব্য ছিল। ওঁরা কোনও উত্তর দিতে পারেননি আমাদের। সিসি ক্যামেরা নেই কেন? ওঁরা কিছু বলতে পারলেন না। অনেকক্ষণ পরে বললেন, আমাদের হাত-পা বাঁধা। আমরা কিছু করতে পারি না এখানে। স্টুডেন্টরা করতে দেবে না। পুলিশ কেন ঢুকতে পারে না, সেই প্রশ্নও করেছি। উত্তর দেওয়ার মতো কোনও ভাষা নেই ওঁদের কাছে। ওঁরা কিছু কথা আমাদের বলতে পারেননি। ওঁরা কী করতে এসেছিলেন, সেটা বুঝতেই পারলাম না। সিসি ক্যামেরা তো থাকা উচিত। সব জায়গায় থাকে, শপিং মলেও থাকে, এখানে কেন নেই। তারও কোনও উত্তর নেই।”
প্রসঙ্গত, গত বুধবার প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে। অভিযোগ ওঠে, সিনিয়রদের র্যাগিংয়ের শিকার হয় সে। এই ঘটনার পর থেকে তোলপাড় হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি। গ্রেফতার করা হয় তিনজনকে। তার মধ্যে একজন যাদবপুরের প্রাক্তনী ও অন্য ২ জন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। ঘটনায় পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্তদন্ত। এ দিকে, পুত্রশোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি ওই পড়ুয়ার বাবা-মা। ছেলেকে হারিয়ে এক কথায় পাথর হয়ে পড়েছেন তাঁরা।