হাড়োয়া: রবিবার হাড়োয়ায় তৃণমূল নেতা খুনের চারদিনের মাথায় আবারও তৃণমূল কর্মীকে খুন স্বরূপনগরে। তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল একদল মদ্যপ যুবকের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত মৃতের স্ত্রী ও ছেলে। ঘটনায় গ্রেফতার তিনজন।
উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থানার কৈজুরী গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাদুরিয়া গ্রামের ঘটনা। পরিবার সূত্রে খবর, ১৫ অগস্ট রাত্রিবেলা ওই গ্রামে তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ জন পিকনিক করছিলেন। সেই সময় মদ্যপ যুবকরা উদ্যাম নাচ করছিলেন। সঙ্গে বাজানো হচ্ছিল সাউন্ড বক্স। আর সেই সাউন্ড বক্সের বিকট আওয়াজ সহ্য করতে না পরে প্রতিবাদ করেন গোবিন্দ মণ্ডল (৬৮)। এলাকায় গোবিন্দবাবু সক্রিয় কর্মী হিসাবে পরিচিত।
মদ্যপ যুবকদের এই সব কীর্তির প্রতিবাদ করেন ওই তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, তখনই তাঁর উপর চড়াও হয় ওই যুবকরা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। গোবিন্দবাবুর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।আক্রান্তের ছেলে সমীরণ মণ্ডলও যুব তৃণমূল নেতা। তাঁকেও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় গুরুতর জখম হন বাবা-মা-ছেলে। তিনজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে শাঁড়াপুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গোবিন্দ মণ্ডলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ওই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবার এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে স্বরূপনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতরা হলেন অর্জুন মণ্ডল, সুজিত মণ্ডল ও শঙ্কর মণ্ডল। এই তিনজনকে বৃহস্পতিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হবে। তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে স্বরূপনগর থানার পুলিশ।
মৃতের স্ত্রী বলেন, “তিনচার জন আমাদের ফেলে মেরেছে। এরা হচ্ছে বিজেপি-সিপিএম-নির্দল। আমার স্বামীকে বলেছিল নির্দল করতে। কিন্তু ও অস্বীকার করায় এই কাজ করেছে।” ঘটনার কথা অস্বীকার করে বিজেপি নেতা বৃন্দাবন সরকার বলেন, “এটা কোনও রাজনৈতিক ঘটনা নয়। এটা ব্যক্তিগত বিষয়। বিজেপি-র কেউ এখানে জড়িত নয়।” উল্লখ্য়, গত রবিবার ভোররাতে অঞ্চল সভাপতির বাড়ি থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন বসিরহাটের তৃণমূল নেতা শেখ সাহেব। সামলা বাজারে এলাকায় আসতেই ১০ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতীদের একটি দল তাঁকে ঘিরে ধরে। বন্ঝ করে দওয়া হয় বাইক। তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়। গুলি লাগতেই ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে মৃত্যু হয় তাঁর।