আসানসোল: চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। ইতিমধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুও হয়েছে। অন্যান্য জেলার মতো পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের পলাশডিহাতে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের তৎপরতা বেড়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের মতে জুলাই এর ২০ তারিখের পর দুর্গাপুরে ডেঙ্গির সংখ্যা ৫০-র বেশি। গত জানুয়ারি থেকে হিসেব করলে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট ডেঙ্গি ধরা পড়েছে ১৩০ টি। আসানসোল সাব ডিভিশনে সেই সংখ্যা মাত্র ২০। তাই সতর্কতা থাকলেও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নেই।
জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ শেখ ইউনুস বলেন,”লার্ভা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। পতঙ্গবিদরা নমুনা সংগ্রহ করছেন। আশাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। অসুখের খবর নিচ্ছেন। মানুষকে সতর্ক করছেন। আসানসোল ও দুর্গাপুর পুরনিগমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিয়মিত সাফাই অভিযানের। বিশেষ করে পানাগড়ের মত এলাকায় গ্যারেজ বা টায়ারে জমা জলে নজর রাখতে। অ্যাডাল্ট মশা রোধে কামান দাগার নির্দেশ এসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে।”
একই জেলা স্বাস্থ্য অধিকারিকের দাবি, রক্তের নমুনা সংগ্রহের জন্য স্পেশাল ক্যাম্প বা শিবির করা হয়েছে দুর্গাপুরে।
এ দিকে জুলাইয়ের সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দিল জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ। সামান্য বৃষ্টিতেই পুরসভার বিভিন্ন এলাকায় জমা জলের ছবি ফুটে উঠেছে শহর জুড়ে। ড্রেনে জমা জলে দেখা যাচ্ছে মশার লার্ভা। শহরের গ্যারেজে টায়ারে টায়ারে দেখা মিলল জমা জল। অথচ বাস্তবে পুরপ্রশাসনের তৎপরতার দেখা মেলেনি বলেই অভিযোগ।
এ দিকে, ডেঙ্গি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করতে নিকাশি খুব জরুরি বলে মনে করছেন পুরবাসী।
পৌর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত বছর জুন মাসে আসানসোল পুরসভা এলাকায় প্রায় ১৯ টি ওয়ার্ডকে সংবেদনশীল বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। পুরসভার প্রায় ১০০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে একাধিক দলে ভাগ করে বাড়ি বাড়ি পাঠানো হয়েছিল। কেউ জ্বরে আক্রান্ত কি না সেই তথ্য সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে জল জমতে না দেওয়া ও সাফাই নিকাশি বিষয়ে সচেতন করা হয়েছিল। ডেঙ্গি প্রতিরোধ কর্মসূচী সংক্রান্ত বিষয়ে গাফিলতির অভিযোগ থাকায় একজন চিকিৎসক ও দুজন স্বাস্থ্যকর্মীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ধরানো হয়েছিল। এবারেও কিন্তু একই ঘটনা ঘটল। পুরপ্রশাসন তৎপর হওয়ার আগেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিল পশ্চিম বর্ধমান জেলায় বলে মনে করছেন অনেকে।
যদিও, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি পুরপ্রশাসন ডেঙ্গি প্রতিরোধে তার কাজ করছে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। তবে গত বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল ২৬০ জনের। সেই পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলায় এখন যে ডেঙ্গির প্রকোপ রয়েছে তা উদ্বেগজনক নয়।